রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৫ অপরাহ্ন

ই-পেপার

গুরুদাসপুরে একটি সেতুর অভাবে দশ গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ

মো. আখলাকুজ্জামান, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: রবিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৯:৫৩ অপরাহ্ণ

দীর্ঘদিনের দাবি সত্তে¡ও একটি সেতুর অভাবে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের দশ গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সেতু না থাকায় এসব ওই এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোতে চলাচল করছেন। উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া ওই আত্রাই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য অনেকবার প্রতিশ্রুতি মিললেও বাস্তবায়ন হয়নি। নদীপাড়ের ১০টি গ্রামে বসবাসরত হাজার হাজার মানুষ একটি ব্রিজের জন্য বছরের পর বছর আশায় বুক বেঁধে আছেন। কিন্তু তাদের দুঃখ দুর্দশার দিকে আজ পর্যন্ত কেউ ফিরেও তাকায়নি। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, আত্রাই নদী পারাপারে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। সাঁকো উঁচু-নিচু হওয়ায় বয়স্ক মানুষ, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। কোনো মহিলার প্রসব বেদনা দেখা দিলে অথবা জরুরি প্রয়োজনে কাউকে হাসপাতালে নিতে হলে পোহাতে হয় অনেক দুর্ভোগ। নদীপারের গ্রামগুলোতে দুই জেলার মানুষের বসবাস ছাড়াও প্রচুর কৃষিজমি রয়েছে স্থানীয় কৃষকদের। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় প্রতি বছর অনেক ফসল নষ্ট হয়ে যায়।
উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের বিলহরিবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হান্নান (৭৩) বলেন, সেতু নির্মাণে অনেকবার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেলেও বাস্তবে তা আর হয়নি। এতে বিপাকে পড়েছেন হাজারো মানুষ। নিরুপায় হয়ে ঝুঁকি নিয়েই সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছেন।
নদীর পূর্ব পাশের একটি গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক জানান, এ সেতু না হওয়ায় তাঁদের গ্রামে পাকা সড়ক হয়নি। নদীটি খরস্রোতা হওয়ায় খেয়া নৌকায় পারাপার হতে সময় লাগে প্রায় ২০ মিনিট। ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত, ফসল পরিবহনসহ উপজেলা সদরে যেতে হয় এ নদী পার হয়ে। ভরা বর্ষায় নৌকা ও শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপারে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সাবগাড়ী বাজারের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, চলনবিল অধ্যুষিত এই এলাকাটি কৃষি প্রধান। সাবগাড়ী বাজার সংলগ্ন ঘাট হয়েই নদীর উত্তরপাশের গুরুদাসপুর উপজেলার বিলহরিবাড়ী, কারিগরপাড়া, হরদমা এবং সিংড়ার কৃষ্ণনগর, কাউয়াটিকিরি, পানলি ও ডাহিয়া গ্রামের মানুষ তাঁদের উৎপাদিত ফসল পরিবহন করেন। এ ছাড়া নদীর পশ্চিম পাশের সাবগাড়ী, রাবার ড্যাম, যোগেন্দ্রনগর ও ভিটাপাড়া গ্রামের মানুষও ফসল পরিবহনে দুর্ভোগে পড়েন।
খেয়া নৌকার মাঝি সাদেক আলী বলেন, প্রায় ২৮ বছর যাবৎ খেয়ানৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার করছি। এজন্য বছরে সবার কাছ থেকে নির্দিষ্ট টাকা এবং ধান নিয়ে থাকি। বর্ষা মৌসুমে খেয়া থাকলেও শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করি। তবে এখানে একটি সেতু হলে মানুষের কষ্ট অনেক লাঘব হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘শিগগিরই আত্রাই নদীর ওই পয়েন্টে একটি সেতু নির্মাণ করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর