বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৮ অপরাহ্ন

ই-পেপার

প্রকৃতি সুরক্ষা ও ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি – মুফতি মাওলানা: শামীম আহমেদ

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮:২১ অপরাহ্ণ

প্রকৃতি আল্লাহর এক অনন্য সৃষ্টি। আকাশ, সূর্য, চাঁদ, নদী, পাহাড়, বনজ গাছপালা, পশুপাখি—সবই আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ। ইসলামে প্রকৃতিকে কেবল সৃষ্টির অংশ হিসেবে দেখানো হয়নি, বরং এর প্রতি দায়িত্ববোধ ও যত্ন নেওয়ার নির্দেশও রয়েছে।

কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:

“তিনি আকাশ ও  পৃথিবী সৃষ্টি  করেছেন এবং তোমাদের জন্য সেখানে বিভিন্ন সম্পদ রেখেছেন।” (সূরা আল-বাকারা, ২:২৯)

এই আয়াত আমাদের স্মরণ করায় যে, প্রকৃতি শুধু আমাদের ব্যবহার ও কল্যাণের জন্য নয়, বরং তার প্রতি সঠিক ব্যবহার ও যত্ন নেওয়াও আমাদের দায়িত্ব। ইসলামে প্রকৃতির অপব্যবহার বা ধ্বংস নিষিদ্ধ।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

“যে ব্যক্তি একটি গাছ রোপণ করে, তা সে নিজে ভোগ না করলেও, এর প্রতিফলন তার জন্য নেকিরূপে লেখা হবে।”

এটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে, বৃক্ষ রোপণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ কেবল প্রাকৃতিক দৃষ্টিকোণ নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।

ইসলাম প্রকৃতিকে শুধু রক্ষা করারই শিক্ষা দেয় না, বরং মানুষের ব্যবহার ও দায়িত্বের মধ্য দিয়ে প্রকৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশও দেয়। উদাহরণস্বরূপ:জল সংরক্ষণ: পানি অপচয় করা নিষিদ্ধ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “পানি অপচয় করো না, যদি তুমি নদীর ধারে থাকো।”পশুপাখির যত্ন: পশুপাখি ও প্রাণীকে কষ্ট দেওয়া নিষিদ্ধ।বৃক্ষ রোপণ ও বাগান সৃষ্টি: আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবে।

বর্তমান বিশ্বে যেখানে বন নিধন, পরিবেশ দূষণ এবং জলসম্পদের ক্ষয় মানব জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে, ইসলামের এই শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে। প্রকৃতি সংরক্ষণ শুধু সামাজিক বা বৈজ্ঞানিক দায়িত্ব নয়, এটি ঈমানেরও অংশ।

প্রকৃতি রক্ষা মানে শুধু পরিবেশ সুরক্ষা নয়, বরং মানবজাতির স্থায়িত্ব, আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং নৈতিক দায়িত্ব পালন। আমরা যদি সচেতন হই, বৃক্ষরোপণ করি, নদী ও জলাশয় পরিচর্যা করি, পশুপাখির যত্ন নিই এবং পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখি, তবে আমরা প্রকৃতিতে ইসলামের আদর্শ বাস্তবায়ন করছি।

সুতরাং, ইসলাম আমাদের শেখায়—প্রকৃতির প্রতি যত্নশীল হওয়া কেবল নৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি আমাদের ঈমানেরও প্রতিফলন। প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করা মানে আল্লাহর সৃষ্টি রক্ষা করা এবং সমাজে স্থায়ী কল্যাণ বয়ে আনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর