মসজিদ ইসলামের এমন এক পবিত্র স্থান, যেখানে মুসলমানরা আল্লাহর ইবাদত করে, ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য—সব মসজিদে নামাজ কবুল হয় না। ইসলাম এমন কিছু মসজিদের কথা উল্লেখ করেছে যেখানে নামাজ আদায় করা জায়েজ নয়, বরং গুনাহের কাজ হিসেবে গণ্য হয়। কোরআনের আলোকে
আল্লাহ তাআলা বলেন—
“যারা ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে, অবিশ্বাস প্রচারের জন্য, মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য এবং পূর্বে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা লোকদের জন্য ওঁত পেতে থাকার উদ্দেশ্যে মসজিদ নির্মাণ করেছে, তারা শপথ করে বলে—আমরা তো কল্যাণই চাই। কিন্তু আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তারা মিথ্যাবাদী। তুমি কখনো সেখানে নামাজের জন্য দাঁড়াবে না।”
(সূরা আত-তাওবা, আয়াত ১০৭-১০৮)
এই আয়াতে যে মসজিদের কথা বলা হয়েছে, ইতিহাসে সেটিই মসজিদে দিরার নামে পরিচিত। এটি মুনাফিকরা নির্মাণ করেছিল মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে।তাফসিরের ব্যাখ্যা
প্রখ্যাত তাফসিরকার ইবনে কাসির (রহ.) বলেন—
“যে মসজিদ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নয়, বরং গোঁড়ামি, বিদ্বেষ ও বিভেদের উদ্দেশ্যে তৈরি হয়—তা আসলে মসজিদ নয়; বরং তা গুনাহের স্থান।”
(তাফসির ইবনে কাসির, সূরা আত-তাওবা: ১০৭)
অর্থাৎ—যে মসজিদ ফিতনা, রাজনীতি, দলাদলি, ব্যক্তিস্বার্থ বা দ্বীনের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়, সেখানে নামাজ আদায় করা হারাম ও কবুলযোগ্য নয়। হাদীসের আলোকে
রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে যখন মসজিদে দিরারে নামাজ পড়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়, তখন তিনি আল্লাহর নির্দেশে সেখানে যাননি; বরং নির্দেশ দেন যেন সেই মসজিদ ধ্বংস করে ফেলা হয়।
(সহিহ বুখারি, হাদীস: ৪০৯২
এই ঘটনার মাধ্যমে আমরা শিখি—
মসজিদ আল্লাহর ঘর—কিন্তু যদি তা আল্লাহর অবাধ্যতার কেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়, তবে সেটি আর পবিত্র থাকে না। তাই আমাদের উচিত—
সেই মসজিদে নামাজ আদায় করা, যেখানে তাকওয়া, সত্য, ঐক্য ও ইমানের চেতনা জাগ্রত থাকে।