ইসলাম ধর্মে নেতৃত্ব একটি বড় দায়িত্ব ও আমানত। এটি সম্মান বা পদমর্যাদা নয়, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রদত্ত একটি পরীক্ষা। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে কোরআন ও হাদীস সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছে—যে নেতৃত্ব ন্যায়, জ্ঞান, আমানত ও তাকওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই নেতৃত্বই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন—
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দেন যে, তোমরা আমানত তাদেরই নিকট পৌঁছে দাও, যারা তার উপযুক্ত।”
(সূরা আন-নিসা: ৫৮)
এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ যে কোনো দায়িত্ব বা নেতৃত্ব এমন ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত করা উচিত, যিনি জ্ঞান, ন্যায়বোধ, যোগ্যতা ও তাকওয়ায় শ্রেষ্ঠ।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
“যে ব্যক্তি নেতৃত্ব চায়, তাকে নেতৃত্ব দিও না; আর যে নেতৃত্বের ভার গ্রহণ থেকে বিরত থাকে, তাকেই নেতৃত্বের জন্য উপযুক্ত মনে করো।”
(সহিহ বুখারি ও মুসলিম)
অর্থাৎ, নেতৃত্বের লোভী নয়, বরং দায়িত্বশীল ও আল্লাহভীরু ব্যক্তিই ইসলামে নেতৃত্বের যোগ্য। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এমন নেতার প্রয়োজন, যিনি কোরআন-হাদীসের আলোকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেন, দ্বীনের মর্যাদা রক্ষা করেন, কাউকে অবিচার করেন না, এবং উম্মতের ঐক্য বজায় রাখেন।
১. তাকওয়া ও আল্লাহভীতি: যাতে তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করেন।
২. ইলম ও প্রজ্ঞা: কোরআন-হাদীসের জ্ঞান থাকা আবশ্যক, যাতে সঠিক ইসলামী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
৩. ন্যায়পরায়ণতা: নিজের, আত্মীয় বা দলের স্বার্থে নয়, বরং ন্যায়ের পথে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
৪. সচ্চরিত্র ও শৃঙ্খলা: সমাজে আদর্শ আচরণ প্রদর্শন করা এবং প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা করা।
৫. পরামর্শ ও সহমর্মিতা: উলামা ও সদস্যদের পরামর্শে কাজ করা এবং অহংকারমুক্ত থাকা।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দাবি নয়, বরং আমানত। যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়, জ্ঞান ও ন্যায়বিচারকে জীবনের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করবে, সেই-ই প্রকৃত নেতা হতে পারে। ইসলামী সমাজে এ ধরনের নেতৃত্বই শান্তি, ঐক্য ও উন্নতির পথ প্রশস্ত করে।