কোনো এক গ্রামে রহিম নামের এক লোক বাস করে। সে খুবই দরিদ্র, অসহায়, নিরীহ এবং কেটে খাওয়া মানুষ । আর্থিক অবস্থা খুবই নিম্ন। তার একটি ঘর ছিল সেটা বনের ছন দিয়ে বাঁধা। তার এক মেয়ে নাম জুলেখা। জুলেখার বয়স মাত্র বারো। সংসারের ধ্যান খেয়াল এখনও তার মাথায় আসছে না খেলাধুলার সময় তবুও মায়ের সাথে ঘরের কাজে সহযোগিতা করে জুলেখা। এই বয়সেই রান্নার কাজে খুব পারদর্শী জুলেখা। একদিন সে একা একা রান্না ঘরে রান্নার কাজে বসেছে, তার মা বাড়িতে ছিলো না তাই। এদিন হঠাৎ করে ফুচকে চুলার আগুন ঘরের বেড়ায় ধরেছে। কিন্তু বুঝতে পারে নাই হঠাৎ জুলেকার কান্নার আওয়াজ। চিৎকার করতে শুরু করলো আগুন! আগুন! আগুন! তার বাবা এমন ধ্বনি শুনে ছুটে আসলো তার কাছে। তাড়াহুড়ো করে কিছুই করতে পারলো না সে। এতো বড় আগুন দেখে স্টোক করে জুলেখার বাবা, এদিক থেকে গ্রামের মানুষ ছুটাছুটি করে সবাই এসেছে।
তার এই আগুন দেখে কেউ কাঁদে, কেউ হাসে, কেউ হতাশ আর কেউ দেখে তামাশা। কোনো কোনো মানুষ পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে আর কোনো কোনো মানুষ ঠিক দাঁড়িয়ে আছে। বিত্তবানরা ঘরে বসে আছে কেউ অস্থির কেউ সমালোচনায় ব্যস্থা কেউ দাঁড়িয়ে অন্যদেরকে জ্ঞান দিচ্ছে। ছোট শিশুরা মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল। কেউ অগ্নিকান্ড দেখে নিজ ঘরের গরু, ছাগল, হাস-মুরগী আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবাস পত্র সরিয়ে নিচ্ছে এই হলো হরহামেশা। কিন্তু অবশেষে রহিমের জন্য কেউ কিছুই করতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে কিছু সাধু ব্যক্তি তার মেয়ে জুলেখাকে দমক দিচ্ছে কেউ বলে অলক্ষী মেয়ে একটা। কেহেই আর সহযোগিতা করে না, ঘর হারিয়ে নিঃস্ব এখন তারা।
এইসব তামাশা দেখে আগুনের নিজেই আফসোস করতে লাগলো, কেন তার ঘরে আগুন ধরালাম। কিন্তু আগুন কি আর এসব ভালো মন্দ বুঝে।
অনুরূপভাবে সমাজের অনাথ কিশোরী মেয়েটির একই পরিণতি।