অমিত হাসান হৃদয়:
সদরঘাটে দুই যাত্রীবাহী লঞ্চের সংঘর্ষে ডুবে যাওয়া লঞ্চের এক যাত্রীকে ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (২৯ জুন) রাত ১০টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এয়ার লিফটিং পদ্ধতি ব্যবহার ডুবে যাওয়া জাহাজটি উদ্ধার করার সময় ঐ যাত্রীকে মাঝনদী থেকে জীবিত উদ্ধার করেন। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল জানায় উদ্ধার করার সময় তাকে জীবিত পাওয়া গেছে। তিনি এখনো সুস্থ আছেন। তার হাত পা নড়ছে এবং চোখ খোলা পাওয়া গেছে। কোস্টগার্ড ও নেভির কর্মকর্তারা জানান, তারা যখন উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিটিকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছিলেন তিনি চোখের ইশারায় কথার জবাব দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে দীর্ঘ সময় পানির নিচে আটকে থাকায় তার শরীরের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল।
পানির নিচে তলিয়ে গেলেও এ ব্যক্তি কীভাবে বেঁচে গেলেন তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি যেখানে আটকা পড়েছিলেন সেখানে হয়তো সেভাবে পানি প্রবেশ করেনি। আজ যখন টিউবের মাধ্যমে বিশেষ প্রক্রিয়ায় লঞ্চটি তোলার চেষ্টা করা হচ্ছিল তখন লঞ্চটি সামান্য ভেসে ওঠার পর ওই ব্যক্তি নিজের প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসেন এবং উদ্ধার কর্মীরা তাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে নৌকায় তুলেন। উল্লেখ্য সোমবার (২৯ জুন) রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ডুবে যায়। এতে এখন পর্যন্ত ৩৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ লঞ্চ দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তিদের অনেকেই হয়তো করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য মুখে মাস্ক পরেছিল, হাতে পরেছিল দস্তানা এবং নিয়েছিল ব্যক্তিগত সুরক্ষা ব্যবস্থা। অথচ কী হয়ে গেল, তাই না? . মানুষগুলো তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর আশায় লঞ্চে উঠেছিল।
কিন্তু কে জানতো! তারা তাদের আসল গন্তব্যে পৌঁছে যাবে! কে জানতো! তাদের মৃত্যু এখানেই নির্ধারিত হয়ে রয়েছে! লঞ্চের এই সফরই জীবনের শেষ সফর। মৃত মানুষদের যে লাশগুলো এখানে পড়ে আছে, তারা আজ সকালেও তাদের মৃত্যুর কথা জানতো না। আমাদের মতো তারাও নিশ্চিন্তে, নির্বিঘ্নে জীবনযাপন করছিল। কিন্তু মরণ এসে তাদের জীবনের রঙিন পরিচয়গুলো মুছে দিয়ে গেল। আমরা আরেকটু ভাবি প্রিয় ভাইয়েরা… আমাদের কাছেও মৃত্যু আগমন করতে পারে যখন-তখন। কিন্তু কী প্রস্তুতি আমাদের? আমরা তো এখনো গুনাহেই নিমজ্জি ত! ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিঊন। আল্লাহ তা’আলা মৃত ভাই-বোনদেরকে শাহাদাতের মর্দাযা দান করুন।