বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

রাণীনগরে গ্রামবাসীর টাকায় মাটির রাস্তা নির্মাণ

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ২৬ জুন, ২০২০, ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ

সাইদুজ্জামান সাগর  রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের নিচ-তালিমপুর গ্রাম থেকে কাঠালগাড়ী পর্যন্ত মাটির রাস্তা নির্মান করছেন গ্রামবাসী। ওই গ্রামের বসবাসরত ধনী-গরীব মিলে নিজেরায় চাঁদা ভাঙ্গন করে প্রায় দুই কিলোমিটার মাটির রাস্তা নির্মান কাজ ইতিমধ্যেই স্কেবেটার মেশিন দিয়ে শুরু করেছে। উপজেলা পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ উন্নয়নে সরকারের নানা ধরণের প্রকল্প আসলেও রাস্তা নির্মানে দীর্ঘ দিন ধরে এই গ্রামবাসীদের কপালে মাটির কিংবা পাকা সড়ক নির্মাণে কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই জীবন-যাত্রার মান উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে নিরুপায় হয়ে সেচ্ছায় শ্রম ও নগদ অর্থ দিয়ে রাস্তা নির্মানের শুরু করা হয়েছে।

জানাগেছে, রাণীনগর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর কোণে অবস্থিত নিচ-তালিমপুর গ্রাম। গ্রামের পাশেই রয়েছে বগুড়া জেলার নন্দিগ্রাম উপজেলার বিষ্নপুর গ্রাম। তাদেরও চলাচলের ভরসা এই কাঁদা-মাটির রাস্তা, দুই গ্রাম মিলে প্রায় ৭শ’ পরিবারের বসতি। গ্রাম থেকে মাঠের মধ্য দিয়ে জমির আইলের মতো একমাত্র সরু রাস্তা মিলিত হয়েছে আবাদপুকুর-বগুড়া রাস্তার চয়েনের মোড়ের পূর্ব দিকে কাঠালগাড়ী নামকস্থানে। দীর্ঘ দিন থেকে সরু রাস্তায় চলাচল করলেও রাস্তাটি পুরোপুরি নির্মান করার জন্য মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে ধর্না দিয়েও কোন ফল পায়নি গ্রামবাসি। গত ২০০৪ সালে স্থানীয় সরকারের বরাদ্দ থেকে ভ্যান চলার মতো মাটি কেটে রাস্তা নির্মান করা হয়।এর পর দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর অতিবাহিত হলেও কেউ কোন উদ্যোগ না নেয়ায় বর্ষার পানিতে আবারো জমির সাথে মিশে আইলের মতো হয়ে গেছে রাস্তাটি। ফলে ওই গ্রাম দু’টি থেকে ধান,চালসহ কৃষিপন্য ও বিভিন্ন মালামাল পরিবহনে দুই কিলোমিটার রাস্তা পারি দিতে অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।অবশেষে ভিক্ষুক, রিক্সা চালক,ভ্যান চালক,দিনমজুর,ধনী-গরীব মিলে ৫শ’টাকা থেকে শুরু করে সার্মথ অনুযায়ী ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিজেরায় চাঁদা দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার থেকে স্কেবেটার মেশিন দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা নির্মান কাজ শুরু করা হয়েছে। স্কেবেটার মেশিনের পাশা-পাশি গ্রামের লোকজন মিলে সেচ্ছায় শ্রম দিয়ে রাস্তা নির্মান করছেন।

উপজেলার তালিমপুর গ্রামের আহাদ আলী (৮০) সহ জিল্লুর রহমান,ছামসুজ্জামান,আমানুর রহমান স্বপন,মিজানুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,কাঁদা পানি পারি দিয়ে চলাচল করতে করতে জীবনটা কেটে গেল !কিন্তু আমাদের ভোগান্তি নিরসনে কেউ এগিয়ে আসলনা।
একডালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম বলেন, গত চার বছর আগে রাস্তাটির কিছুটা কাজ করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় চার বার প্রকল্প আকারে দিয়েও কাজ হয়নি। তার পরেও চেষ্টা করছি রাস্তা নির্মান ও পাকা করণের জন্য ।

রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান মিয়া বলেন,গ্রামীন রাস্তাঘাট নির্মান,পাকাকরণের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান কে প্রকল্প আকারে দিতে হয়। যেহেতু গ্রামবাসী মাটি কেটে রাস্তা নির্মান করছেন সেহেতু রাস্তার কাজ একধাপ এগিয়ে রইল। পাকা করণের জন্য প্রকল্প আকারে দিলে অবশ্যই তা নির্মান বা পাকা করণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর