সংবাদদাতা পাবনা:
একটু ভালো থাকার ও পরিবারের স্বচ্চলতা আনার জন্যে অনেকেই পরিবার পরিজন ছেড়ে নিজের শেষ সম্বল বিক্রি করে পারি জমান প্রবাস নামে স্বপনের দেশে, কিন্তু এখানে এসেও যেনো বিরম্বনা আর ঝামেলা পিছু ছাড়ে না। প্রবাসে কেউ কেউ ভালো থাকলেও অধিকাংশ প্রবাসীরই রয়েছে নিজ দেশীয় লোকদের মাধ্যমে ধোকায় পরে সর্বশান্ত হওয়ার ঘটনা এমন কি নিজের প্রাণ নাশেরো থাকে আশংকা।
মালয়েশিয়ায় থাকা এমনই একজন বাংলাদেশি প্রবাসী,বাড়ি পাবনা জেলার আতাইকুলা থানার শারদিয়ার, গ্রামের আঃ সামাদের পুত্র মোঃ মিরাজুল ইসলাম,।
জানাযায় গত ১৬ই মার্চ নিজের নিরাপত্তা এবং দেশে থাকা পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দুতাবাসে মিরাজুল ইসলাম একটি আবেদন পত্র জমা দেন। আবেদন পত্রের মাধ্যমে জানা যায় গত ২০০৪ সালে জীবনের তাগিদে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান তিনি। আসার পর একটা গার্মেন্টস শোরুমে কর্মচারি হিসাবে কাজ করতেন ,পরবতিতে ২০১৬ সালের দিকে একজন মালয়েশিয়ান নাগরিকের সহায়তায় নিজেই একটা গার্মেন্টেস শোরুম দেন। সেই শোরুমে কর্মচারি হিসাবে নিজ গ্রামের বাচ্চু নামে একজনকে নিয়োগদেন তিনি।
এভাবে বেশ ভালোই চলতে থাকে প্রায় দুই বছর । হঠাত একদিন বিশেষ প্রয়োজনে দোকানের মালিক মিরাজুল ইসলাম ২০১৮ সালের দিকে কর্মচারি বাচ্ছুকে দোকানের সমস্ত কিছু বুঝিয়া দিয়ে বাংলাদেশে যায় এবং পারিবারিক কাজ থাকায় প্রায় ৬/৭ মাস বাংলাদেশে থাকতে হয়। এই সুবাদে ব্যবসায়িক সকল লেনদেন দোকানের কর্মচারী বাচ্ছুর মাধমেই হতো।
বাংলাদেশে থাকা গার্মেন্টেস মালিকদের টাকা দেয়ার জন্যে বাচ্চুর কাছ থেকে টাকা চাইলে সে টাকা নাই বলে। কিন্তু তার হিসাব অনুযায়ী আরো ২০ লক্ষ টাকা আছে। টাকা নাই বলাতে তার উপর সন্দেহ হওয়ায় পর্বতীতে একটু খোজ নিতে থাকে পরে যাদের মাধ্যমে বাচ্চু হুন্ডি করে নিজের নামে টাকা পাটাইছে সেই হুন্ডি ব্যাক্তির মাধ্যমে জানা যায় বাচ্চু ১৯ লক্ষ্য টাকা নিজ এলাকার সাইফুল ইসলাম নামের একটি ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাউন্টের মাধ্যমে নিজে আত্মসাৎ করেছে। এই খবর পাওয়ার সাথে সাথেই মিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া আসার জন্য প্রস্তুতি নেন, এবং তার আসার খবর পাওয়ায় সে দোকানের কোন হিসাবাদি না বুঝিয়ে দিয়েই মিরাজুলের আসার আগের দিন সে বাংলাদেশে চলে যায়।
পরর্বতিতে বাচ্চু দেশে গেলে তার স্ত্রী রত্না খাতুনের মাধ্যমে নিজ থানা আতাইকুলাতে বাচ্ছুর নামে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে বাচ্ছুকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতার করার পর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নুরুজ্জামানের মাধ্যমে একটি সুরাহা হয় তাতে সে টাকা নিয়েছে বলে স্বীকার করে এবং ওসির কাছে তাৎক্ষণিক ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করে এবং বাকি টাকা পরে দিবেন বলে স্বীকার করেন।
কিন্তু কিছু দিন পর সে মালয়েশিয়াতে আসেন, আসার পর মিরাজুল ইসলামের কোম্পানীর মালিকের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করে তার ভিসা ক্যান্সেল করে দেন এবং স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীদ্বারা মিরাজুল ইসলামকে হত্যার চেষ্টা চালায় কিন্তু এতে বার্থ্য হয়ে পরবর্তিতে বিভিন্ন ভাবে তাঁকে হত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে এবং বাংলাদেশে থাকা তার স্ত্রীর মুটো ফোনেও তাঁকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়েছে।
এমতাবস্তায় মিরাজুলের স্ত্রী আবারো আতাইকুলা থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন।বর্তমানে মিরাজুল ইসলামের ভিসা না থাকায় মালয়েশিয়ান পুলিশের কাছেও অভিযোগ করতে পারছিনা এই জন্যে শেষ আশ্রয়স্থল দুতাবাসে আবেদন করেন ।
এ বিষয়ে মিরাজুল ইসলাম এ প্রতিবেদকে বলেন, আমি বর্তমানে খুব ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছি জানিনা কখন কি হয়ে যায়, তাই বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে আমি এর একটা সমাধান চাই যাতে এখানে আমি এবং দেশে আমার পরিবার ভালো থাকতে পারি।মালয়েশিয়ায় থাকা তার ভাগ্নে ও বন্ধুরাও মিরাজুলের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বাংলাদেশে থাকা মিরাজুলের আম্মা বলেন বাচ্ছুর ভয়ে আমার ছেলের বউ বাড়ি থেকে অন্যত্র গিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, এমতাবস্থায় সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন এই বৃদ্ধা মা । নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার এক জৈনিক ব্যক্তি জানান, মালয়েশিয়াতে বর্তমানে মোঃ বাচ্চু নিজের নাম আত্মগোপন করে জালাল উদ্দীন নামে একটি পাসপোট তৈরি করে ওখানে অবস্থান করছে। বর্তমান পাসপোট অনুযায়ী তার নাম, জালাল উদ্দিন, পিতাঃ আবেদ আলী, মাতাঃসাহেদা খাতুন। গ্রামঃ শারদিয়ার, পোষ্টঃ সাখারি পাড়া, থানাঃ আতাইকুলা, জেলাঃ পাবনা।
এলাকাবাসী আরো জানান প্রবাসী মিরাজুল এর কর্মচারী থাকা অবস্থায় তার বিপুল পরিমাণ অর্থ বাচ্চু আত্মসাৎ করেছে এটা আমরা অনেকেই জানি এবং সালিস দেনদরবার হয়েছে,।এ বিষয়ে আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিরুল আলম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।