মহানবী (সা.) কে নিয়ে ফেসবুকে হিন্দু যুবকের কটূক্তির স্ট্যাটাসের জেরে চাটমোহরের হান্ডিয়ালে বিক্ষোভ ও বল্লভপুর গ্রামে মহাদেব মন্দিরে দুইটি প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১০ নভেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে। প্রশান্ত সরকার নামক এক হিন্দু যুবক তার ফেসবুক আইডিতে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সাঃ) কে নিয়ে কটুক্তির জেরে এ ঘটনা ঘটে। প্রশান্ত সরকার চাকরির সুবাধে সে ঢাকায় অবস্থান করেন। প্রশান্ত সরকার (৩৬) বল্লভপুর গ্রামের শ্রী কালা সরকারের ছেলে। এ ঘটনায় থানা পুলিশ রবিবার রাতে দুই জনকে সন্দেহ মূলক আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়।
জানা গেছে, প্রশান্ত সরকার নামক ঐ যুবক বিভিন্ন সময়ে তিনি তার ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (সাঃ) কে নিয়ে কটুক্তি করে আসছিলেন। গত শনিবার (৯ নভেম্বর) বিষয়টি এলাকাবাসীর দৃষ্টিগোচর হলে মুসলিম জনতা প্রশান্তকে আটকের দাবীতে রাত সাড়ে ৮ দিকে হান্ডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বাজার প্রদক্ষীণ করে হান্ডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসে শেষ হয়। এসময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা ইসলাম ধর্ম আবমাননা ও মহানবী (সাঃ) কে কটুক্তির তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং অভিযুক্ত প্রশান্ত’র দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন, অন্যথায় পরবর্তী কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন। এসময় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হলে বাজারের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দোকান পাট বন্ধ করে ফেলেন। এ খবর পেয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিম ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিলেও রবিবার (১০ই নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এলাকাবাসী ও বিক্ষুব্ধ জনতা ফের বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ মিছিল থেকে কিছু জনতা বল্লভপুর গ্রামের মহাদেব মন্দির ঘর ও দুইটি প্রতিমা ভাংচুর করে। প্রতিমা ভাংচুরের দায়ে সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। বিক্ষুব্ধ জনতা হান্ডিয়াল পুলিশ ফাঁড়ি ঘিরে রাখেন। চাটমোহর থানা পুলিশ, এ.এসপি (চাটমোহর সার্কেল), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, ডিবি পুলিশসহ প্রশাসনিক অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিম জানান, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এলাকাবাসীকে বিক্ষোভ মিছিল করতে নিষেধ করা সত্ত্বেও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিল থেকে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে কেউ মামলা করেনি।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে চাটমোহর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় কোন পক্ষই মামলা করেনি। দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলেও সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। বিষয়টির উপর আমরা সব সময় নজর রাখছি।