সিরাজগঞ্জে মওলানা ভাসানী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো: জহুরুল ইসলাম শেখ এর বিরুদ্ধে নানাবিধ দূর্নীতির অভিযোগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর দাখিল করেন একই কলেজের এক প্রভাষক। অভিযোগের আলোকে গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং তারিখে দিনব্যাপী তদন্ত করেছেন জাতীয় বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি।
জানা যায়, গত ২ নভেম্বর ২০২২ইং তারিখে মওলানা ভাসানী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো: জহুরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দূর্নীতি করে প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া প্রতিকার চেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর তদন্তের আবেদন করেন প্রভাষক খোন্দকার মো: রাজু আহম্মেদ। অভিযোগের প্রেরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং তারিখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি মওলানা ভাসানী ডিগ্রি কলেজে এসে তদন্ত করেছেন
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ শহরের মুজিব সড়স্থ মওানা ভাসানী ডিগ্রি কলেজটি ১৯৯৪সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, অত্যন্ত সুনাম এর সহিত কলেজটির পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল, বর্তমান অধ্যক্ষ মো: জহুরুল ইসলাম ২০০৯ সালে কলেজে যোগদানের পর থেকে অত্র কলেজের সভাপতি প্রভাবশালী হওয়ায় তার সহযোগিতায় বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছে, যা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন করছে এবং প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রতিবাদ করলে সভাপতি এর মাধ্যমে হুমকি ধামকি দেওয়া হয বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন ।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, সয়াধানগড়া সমাজকল্যাণ মোড়স্থ এলাকায় কলেজের নিজস্ব ৪৬ শতক জমি মাটি ভরাটের নামে অধ্যক্ষ নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রায় ২৩ লক্ষ টাকা ব্যয় দেখিয়ে ১২ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। ২০০৯ সালের পর থেকে প্রায় ১৮জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীর প্রতিজনের কাছ থেকে প্রায় ১০-১২ লাখ টাকা আদায় করে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাত করেন। নতুন ভবন (শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক) নির্মানের পূর্বে টিনসেড, অর্ধপাকা দালান ও গাছ বিক্রির টাকা কলেজ তহবিলে জমা না করে আত্মসাত করেন। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের শিক্ষক কর্মচারীদের কলেজ কর্তৃক প্রদত্ত বাড়ী ভাড়া ভাতার এক মাসের প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা শিক্ষক/কর্মচারীদের না দিয়ে অডিটরদের ঘুষ দেয়ার কথা বলে আত্মসাত করেন যা এখনও বেসরকারি বেতন বহিতে দেখানো হয়েছে । প্রকৃত পক্ষে শিক্ষক কর্মচারীগণ উক্ত টাকা গ্রহণ করেন নাই এবং স্বাক্ষরও করে নাই।
২০১৪ সালে কলেজের ৩য় তলা ভবন নির্মাণ কাজে নির্মাণ ব্যয় ৮৫ লাখ টাকা দেখিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার এবং ভুয়া বিল ও ভাউচারের মাধ্যমে প্রায় ২০ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে আত্মসাত করেন অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম।
এছাড়া মওলানা ভাসানী ডিগ্রি কলেজেে গ্রন্থগারিক সৃষ্ট পদ না থাকার পরও ১৬ লাখ টাকার বিনিময়ে ১৯.৪.২০২০ইং তারিখে তাড়াশ উপজেলার বীরেন্দ্র নাথ মাহাতো এর পুত্র শংকর কুমার মাহাতোকে গ্রন্থগারিক পদে নিয়োগ প্রদান করেন অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম। পরবর্তী এমপিওভূক্ত থেকে বেতন ভাতা না করাতে পেরে শংকর কুমার মাহাতো ১ বছর কর্মস্থল থেকে স্বেচ্ছায় চলে যান। ১৬ লাখ টাকার মধ্যে শংকর কুমার মাহাতো এযাবত ৮ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম।
এবিষয়ে মওলানা ভাসানী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম বলেন, সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমার সাথে সন্ধ্যার পর কলেজে দেখা করেন। বিষয়গুলো সব মিথ্যা।
মওলানা ডিগ্রি কলেজের বিদ্যুসাহিত সদস্য প্রফেসর এসএম মনোয়ার হোসেন বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ইং তারিখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তদন্ত কমিটি এসেছিল। তদন্ত করেছে। আমিও তদন্ত কমিটির সাথে ছিলাম, তদন্ত কমিটির প্রধান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিদর্শক ওমর ফারুক এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোনটি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।।