সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

তাড়াশে ঐতিহ্যবাহী কুমড়া বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত কারিগরা

মোঃ মুন্না হুসাইন, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২২, ৫:৫৫ অপরাহ্ণ

খেশারী, এ্যাংকর, ছোলা, মাসকালাইয়ের ডাল কয়েক ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে মিলে ভাঙ্গানোর পর তার সাথে পাকা চালকুমড়ো ভাল করে ফেনিয়ে মিশিয়ে তৈরী করা হয় শীত কালের উপাদেয় খাবার কুমড়ো বড়ি। এখনো শীত না আসলেও ইতিমধ্যেই তাড়াশের নওগাঁর  অনেকেই কুমড়ো বড়ি তৈরী ও বাজারজাত করণের কাজ শুরু করেছেন। মুখরোচক হওয়ায় ভোজন বিলাসীরা শৈল, টাকি, ফাতাসি, টেংড়াসহ বিভিন্ন মাছ কুমড়ো বড়ি দিয়ে রান্না করে খান।
সিরাজগঞ্জ তাড়াশে বিভিন্ন এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবার কুমড়ো বড়ি তৈরী ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তবে তাড়াশে পৌর সদরের নওগাঁর গ্রামে কুমড়ো বড়ি বেশি তৈরী হয়। কুমড়ো বড়ি তৈরীর কারিগর নওগাঁর মহলার নরমত্তম জানান, বছরের প্রায় ছয় মাস আমরা কুমড়ো বড়ি তৈরী ও বিক্রি করি। খেশারী, ছোলা, এ্যাংকর ডাল ভিজিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে মিলে ভাঙ্গানো হয়। এর পর খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে এগুলি পাকা কুমড়ো দিয়ে ভাল করে ফেনিয়ে পলিথিনের প্যাকেটে ভরে পলিথিনের নিচের দিকের কোনা পরিমান মতো কেটে সে অংশ দিয়ে টিনের তৈলাক্ত মাচায় বড়ি দেই।
কুমড়ো বড়ি রোদে শক্ত হয়ে গেলে উল্টিয়ে দেই। এর পর দুই তিন ঘন্টা পর পর নেড়ে দেই যেন সব অংশে সমান ভাবে রোদ পায়। ভাল রোদ হলে দুই দিনেই শুকিয়ে যায় কুমড়ো বড়ি। শুকোনোর পর বাড়ির পুরুষ সদস্যরা সেগুলি পাশর্^বর্তী তাড়াশের নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী হাটে ও আমরা তাড়াশ  উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় এগুলো বিক্রি করি। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি এ্যাংকর ডাল ৬৫ টাকা, খেশারী ডাল ৭০ টাকায় ও ছোলার ডাল ৮৫ টাকায় কিনছেন তারা।
অপর কুমড়ো বড়ি ব্যবসায়ী দোলনা বেগম জানান, গত বছরের চেয়ে এবার সব ধরণের ডালের দাম বেড়েছে। এবার প্রতি কেজি খেশারী ডালের বড়ি ১৪০ টাকায়, এ্যাংকর ডালের বড়ি ১২০ টাকা ও ছোলার ডালের বড়ি ১৬০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। এখনো কেউই মাশকালাইয়ের ডালের বড়ি তৈরী শুরু করেন নি। উপকরণের দাম বাড়ায় ক্রেতাকে বেশি দামে কুমড়ো বড়ি কিনতে হবে।
মৃত কালার স্ত্রী মৌত্তিক জানান, সংসারে অনেক খরচ। তাই বসে না থেকে কুমড়ো বড়ি তৈরী করি। ছেলে হাট বাজারে এগুলি বিক্রি করে। এতে বাড়তি কিছু আয় আসে। এ বাড়তি আয় টুকু সংসার পরিচালনায় সহায়ক ভূমিকা রাখে। এক নাগারে বৃষ্টি হলে বড়ি পঁচে যায়। তখন আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।
সোহেল রহমান মানিকের স্ত্রী জিন্নাতাড়া বেগম জানান, স্থানীয় ক্রেতাদের পাশাপাশি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ কুমড়ো বড়ি কিনে নিয়ে যান। এমনকি প্রবাসীরাও দেশে আসলে আবার বিদেশে যাওয়ার সময় কিনে নিয়ে যান কুমড়ো বড়ি। তাড়াশ উপজেলার  কুমড়ো বড়ি এখন দেশের গন্ডি পেড়িয়ে যাচ্ছে বিদেশেও।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর