সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

আগৈলঝাড়ায় দুই যুগেও চোখে পরেনি রাস্তার পাশে ঝুপড়িতে থাকা অসহায় মাসুদাকে ছেলেকে নিয়ে ঝুপড়িতেই দুই যুগ অমানবিক জীবনযাপন

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০২০, ৯:০৪ অপরাহ্ণ

রুবিনা আজাদ, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি:

পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের আসমানী কবিতার আসমানীর চরিত্রর মতোই মাথার উপর চালাবিহীন ঝুপড়িতে চরম অমানবিকতার মধ্যে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার আরেক আসমানীর চরিত্র জীবন সংগ্রামী বিধবা মাসুদা বেগম। স্বামীর মৃত্যুর পরে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে সরকারী রাস্তার পাশে প্রায় দুই যুগ ধরে বসবাস করলেও নজরে আসেসি কোন জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কর্তা ব্যাক্তিদের। জনপ্রতিনিধিদের কাছে বছরের পর বছর ধর্ণা দিয়েও মাসুদার কপালে জোটেনি সরকারী সাহায্যের একটি ঘর বা ঘর তোলার কোন উপকরণ সাহায্য। সরেজমিনে উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের রাস্তার পাশে বসবাসকারী বিধবা মাসুদা বেগম (৪৮) জানান, এই গ্রামের লাল চান মিয়ার সাথে ত্রিশ বছর পূর্বে একই উপজেলার অশোকসেন গ্রামের মন্নান মোল্লার মেয়ে মাসুদা বেগম এর বিয়ে হয়।

 

বিয়ের পরে স্বামীর বাড়িতে তাকলেও প্রায় দুই যুগ আগে স্বামী চান মিয়া মারা যাবার পরে বাপরে ভিটায় তার জায়গা না থাকার কারনে ওই বছরই মাগুরা বেইলী ব্রিজের পাশে ঝুপড়ি তুলে তাতেই বসবাস করতে শুরু করেন। মানুষের বাড়ি ঝি’য়ের কাজ করে কোন রকমে পেট চালিয়ে একমাত্র পুত্রসন্তান কাওসারকে নিয়ে শুরু করেন সংগ্রামী জীবন যুদ্ধ। সারা জীবন অন্যের বাড়ীতে ঝি’য়ের কাজ করে জীবন জিবিকা চালাতে পারলেও বত’মানে করোনা প্রাদুর্ভাবকালে কাজের সুযোগ না থাকায় সংগ্রামী মাসুদা বেগমের বেঁচে থাকার আশা প্রতিনিয়িত সীণ হয়ে আসছে। কান্না জড়িত কন্ঠে জানান মাসুদা বেগম বলেন, আধাপেটা খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে দিন যাপনকরতে হচ্ছে তাদের।

রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-ঞ্ঝা মাথায় নিয়ে ছেলেকে নিয়ে ঝুপড়ির মধ্যে কোন রকমে মাথা গোজেন তিনি। সহ¯্র ফুটো টিনের ছাউনির ঝুপড়িতে ভাঙ্গা একটা চৌকি ছাড়া চোখে পড়েনি কিছুই। ওই চৌকির উপরেই তার কাঁথ- কাপড়, সহায় সম্বল আর পাতানো সংসার। বর্ষায় পানি পরে ভিজে যায় সবকিছু। বৃষ্টির পানি থেকে নিজেদের রেহাই করতে পলিথিন টাঙ্গিয়ে ভর্ষার রাতে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় মাসুদার। মাসুদা বেগম আরও বলেন, স্ব-স্বামীর মৃত্যুর পরে স্থানীয় মেম্বর, চেয়ারম্যানদের কাছে একটি ঘরের জন্য অনেকবার গিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাকে দেয়া হয়নি কোন ঘর বা ঘরের সহায়তা। সই বাধ্য হয়ে রাদে পুরে, বৃষ্টিতে ভিজে সরকারী রাস্তার পাশে এই ঝুপড়িতে বসবাস করছেন তিনি। রাতের গভীরতায় ও নির্জনতায় বেঁচে থাকার আমা প্রদিনি ক্ষীণ হয়ে আসছে। অন্ধকারে রাস্তার শিয়াল, কুকুরের ভয়ে কুঁকড়ে থাকতে হয় তাকে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর