একটা নিউজ করেন। আপনারা আমার মেয়েকে বাঁচান। সাংবাদিককে সামনে পেয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে এই আকুতি জানালেন দরিদ্র মা-বাবা। পাবনার চাটমোহর উপজেলার আফ্রাতপাড়া গ্রামের হাসেম আলী ও রোজিনা দম্পতির কণ্ঠে ঝরল এই আকুতি।
প্রতিবেশী শিশুরা যখন হই-হুল্লোড়ে মেতে থাকে তখন পাঁচ বছর বয়সী লিমা সরকারের কান্নাকাটিতে বাড়ির পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। মুখ থেকে হারিয়ে গেছে মা-বাবা ডাক। কয়েক দিন আগেও সমবয়সীদের সাথে খুনসুটিতে মেতে থাকলেও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুটির মুখ থেকে হারিয়ে গেছে হাসি। আরামদায়ক ঘুম এ বয়সেই কপাল থেকে উধাও হয়ে গেছে তার। অসহনীয় যন্ত্রণায় বিছানায় ছটফট করেই শিশুটির কাটে প্রতিটি রাত। মা-বাবাও নির্ঘুম রাত কাটান মেয়ের যন্ত্রণা দেখে কাঁদতে কাঁদতে। এখন অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মেয়ের কষ্ট মুখ বুঝে সহ্য করা ছাড়া উপায় নেই দিনমজুর হাসেম ও রোজিনা দম্পতির।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কোমলমতি লিমার দুটি কিডনীই বিকল হয়েছে। দ্রুত দেশের বাইরে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তা সারিয়ে ফেলা সম্ভব হতে পারে। এ চিকিৎসায় অনেক পরিমাণে ব্যয় হবে। নতুবা শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। চিকিৎসকদের মুখে এমন কথা শুনে মাথায় বাজ পড়েছে দিনমুজুর বাবার। দিনমুজুরের কাজ করে কোন মতো দু-বেলা খাবার খরচ জোগানো দায়, সেখানে মেয়েকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসায় এত অর্থ কোথায় পাবেন! ডুকরে ডুকরে কাঁদা ছাড়া আর কিছুই করার নেই অসহায় বাবার। তবুও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মেয়ের চিকিৎসা খরচ জোগাড়ে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন। কিন্তু আশানুরূপ সহযোগিতা মিলছে না।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, তিন বছর বয়স থেকে হঠাৎ তার চোক মুখ সহ শরিরের বিভিন্ন স্থানের পরিবর্তন দেখা যায়। দিন গড়ানো সাথে সাথে শরিরের বিভিন্ন স্থান (চোখ, নাক, কান পেট ) অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে ওঠে। ক্রমান্বয়ে তা বারতেই থাকে। এমতাবস্থায় লিমাকে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিমাকে পরিক্ষা নিরিক্ষা করে কিডনির সমস্য উল্লেখ করেন। সেখানে চিকিৎসার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যরা তাকে কিডনি হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তুু কোথাও তেমন কোন অবস্থার উন্নতি হয় না। যতোই দিন গড়াচ্ছে অসহনীয় যন্ত্রণা বয়ে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে লিমার জীবন।
কান্নাজড়িত কন্ঠে লিমার মা রোজিনা খাতুন বলেন, গরীব মানুষের ঘরে আল্লাহ এমন রোগ দেন কেন? আল্লাহ তো সব দেখেন, সব জানেন। মেয়ের কষ্ট আমি আর সহ্য করতে পারছি না। টাকার অভাবে কী আমার মেয়ে মারা যাবে? মেয়েকে বিদেশে (ইন্ডিয়া) নিয়ে উন্নত চিকৎসা দেওয়ার জন্য সমাজের স্বহৃদয়বান ও বৃত্তবানদের সহযোগীতা চান তিনি। এ সময় এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘একটা নিউজ করেন। আমার মেয়েকে বাঁচান।’
লিমাকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাঃ
পিতা- হাসেম আলী
গ্রাম- আফ্রাতপাড়া
থানা- চাটমোহর, জেলা- পাবনা।
বিকাশ পারসোনাল নং-০১৯২৫-০৯৭০৮০