মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৯ অপরাহ্ন

ই-পেপার

চৌহালীতে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক দিয়ে হস্তশিল্পে ভাগ্য বদলের চেষ্টা

মাহমুদুল হাসান, চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৪২ অপরাহ্ণ

সিরাজগঞ্জের  চৌহালী উপজেলার খাষপুকুরিয়া, খাষকাউলিয়া ও বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও বাজারে হস্তশিল্প কাজ করে অনেকেই সংসার চালিয়ে আসছেন।
দেশের টেক্সটাইল ও স্পিনিং মিলের পরিত্যক্ত প্লাস্টিক জাতীয় ওয়ানটাইম বেল্ট (প্লাস্টিক বেতি) থেকে এ হস্তশিল্পের তৈরি হয়েছে। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন মালিকানাধীন দোকান। এসকল  মালিকরা শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানা থেকে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক জাতীয় বেল্ট কিনে নিয়ে আসেন, এই প্লাস্টিক বেতি দিয়ে গ্রামীণ নারী-পুরুষেরা মিলে তৈরি করেন- সিলিং,  ডোল কিংবা বেড়া।
এ সকল পণ্যের চাহিদা রয়েছে সারাদেশেই, স্থানীয় হাট-বাজার ছাড়াও কারখানা বা দোকান থেকে তাদের তৈরি পণ্য ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন গ্রাহকরা। বিশেষ করে ধান কাটার মৌসুমে এ ডোল বেড় এর চাহিদা একটু বেশি। সারা বছর তৈরি করা পন্যর চাহিদা হলেও বছরে অন্যান্য সময়ে কারখানা পরিত্যক্ত প্লাস্টিক জাতীয় বেল্ট দিয়ে কারিগররা তৈরি করেন, ঘরের সিলিং, বেড়াসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র। প্লাস্টিকের তৈরি হলেও এ আসবাবপত্র গুলো দেখতে বাঁশ ও বেতের তৈরীর মতোই মনে হয়, টেকসই ও মজবুত হওয়ায় এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। গ্রামীণ জনপদের নারী-পুরুষ সামান্য প্রশিক্ষণ নিয়ে তৈরি করছেন এমন পণ্য। তাদের তৈরি এ পণ্য স্থানীয় চাহিদা পুরণ করতে সক্ষম কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।  ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এ শিল্পকে ঘিরে।
ফলে সংসারে অভাব-অনটন অনেকটাই লাঘব করতে সক্ষম হচ্ছেন নারীরা, এই শিল্পের মাধ্যমে পাল্টে যাচ্ছে তাদের পারিবারিক চিত্র।
খাষপুকুরিয়া শাকপাল  এলাকার নদী ভাঙ্গা রহিম জানান, আমি নদী ভাঙ্গনে বাবদাদার বসতি হারিয়ে মোকার ভাঙ্গা এলাকায় ঘর ভাড়া করে বসবাস করছি। এ সড়কের পাশে একটি টিনের ঘর ভাড়া করে নিজে হাতে কাজ করছি। আমার পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৪ জন, বড় ছেলে কলেজ ও ছোট ছেলে হাইস্কুলে পড়া লেখা করে, তারা লেখা পড়ার পাশাপাশি আমাকে সহযোগিতা করে থাকে। এব্যবসা করে  সংসার চালিয়ে আসছি তবে কারো কাছে দাঁড়াতে হয়না। ১৫/২০ পিস করে চেগার(আকার ভেদে) ও একজন কারিগর একটি করে ডোল বানাতে পারে। তিনি আরো জানান, সিলিং প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, চেগার,ঢোল বিক্রি করেন ১৫০ টাকা কেজি ধরে। এ শিল্প কাজের সাথে জরিত কয়েকজনের সাথে কথা বললে জানা যায়, তাদের উৎপাদিত পণ্য বেশ চাহিদা থাকলেও অর্থের অভাবে সরবরাহ করতে পারছেন না ক্রেতার চাহিদা মতো পণ্য। তবে ব্যাংক কিংবা কোন এনজিও প্রতিষ্ঠান সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করলে হয়তো এ  মিনি কুটি শিল্পর দোকান আরো প্রসারিত করা সম্ভব হতো বলে জানিয়েছেন তারা।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আফসানা ইয়াসমিন জানান, এ শিল্পের সম্প্রসারণের  জন্য উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের সহায়তার আওতায় আনা হবে। সরকার গ্রামকে শহর এবং সমাজে একজন মানুষও বেকার থাকবে না। তারই ধারাবাহিকতায়  পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করে সংসারের চাকা ঘুচাতে পারবে ইনশাআল্লাহ। 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর