কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ সৃষ্টি করতে গতবছর কৃষি অফিস একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ফলে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ২৪৮মেঃটন গম উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ মেঃটন ৷ লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ২০ হেক্টর বেশি ! গড় ফলন ৩.২ মেঃটন ৷ প্রোনোদনা ও পূণর্বাসনের আওতায় গম বীজ সহ উপকরণ বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয় ১ হাজার ৫০০ কৃষকের মাঝে। লক্ষ্যে পৌঁছাতে ইতোমধ্যে কৃষি অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প, পুষ্টি প্রকল্প, বীজ,সার,কীটনাশক সরবরাহ কারি বিভিন্ন কোম্পানির সাথে যৌথ ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলা সদর ও দুর্গম চরাঞ্চলের গম চাষী কৃষক দল গঠন ও উৎপাদিত সঠিক মূল্যে বিক্রি করতে স্থানীয় পর্যায়ে কৃষক নতুন জাতের গমের প্রদর্শনি প্লট স্থাপন, দলভুক্ত কৃষক আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ, সুষম সারের ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান, বালাই দমনে কোয়ালিটি সমৃদ্ধ বালাই নাশক এবং হাইব্রিড জাতের বীজের সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মতো কাজ করে যাচ্ছেন তারা। ফলে কৃষকের মধ্যে গম চাষের আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। এবছর রাজস্ব খাতের মাধ্যমে ২০ টি এবং আরও কিছু প্রকল্পের আওতায় নতুন হাইব্রিড জাতের গমের মাঠ প্রদর্শনী প্লট করা হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা কৃষি অফিসার, উপসহকারী কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে মাঠ পরিদর্শন এবং কৃষককের সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানের করনীয় বিষয় পরামর্শ প্রদান করেন। মান সম্মত বীজ সরবরাহ করতে বিভিন্ন হাইব্রিড বীজ আমদানিকারক কোম্পানির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
কৃষককের মাঝে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে আইসিএম আইপিএম এর মাধ্যমে ফসল উৎপাদন উদ্ধকরণ চলছে। কৃষি অফিসের দায়িত্বশীল অফিসারদের পরামর্শে কৃষকরা এবার, শতাব্দি(বারি-২১)- ৬০০ হেঃ, প্রদীপ(বারি-২৪)-৭৪৫ হেঃ, বারি-২৬, ৫০ হেঃ, বারি-২৭, ৭৫ হেঃ,বারি-২৮, ১১০ হেঃ, বারি- ৩০, ২৫ হেঃ, বারি-৩১, ২০ হেঃ, বারি-৩২, ১০ হেঃ, বারি-৩৩, ০৫ হেঃ ও সুপার সাইন ২৭৬০ জাতের গমের বীজ রোপণ করছেন। কৃষি অফিস তথ্য সূত্রে ২০২১/২০২২ অর্থ বছরে ৬০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে ৷
চাহিদাও রয়েছে বেশ ভালো, অন্যান্য ফসলের চেয়ে দাম ও লাভের মুখ বেশি।
উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের কৃষক গম চাষি মাজম সিকদার বৈন্যা গ্রামের কৃষক ছলেমান,রেহাই পুকুরিয়া ব্বলকের কৃষক সেলিম বলেন, গতবার কৃষি স্যারদের পরামর্শে গমের আবাদ করে আর সব ফসলের চেয়ে বেশি টাকা পাইছি।গমের ফলন ভাল পাই, কোন কিছুই ফেলতে হয় না, সবকিছু থেকেই টাকা আসে।
খাষকাউলিয়া গ্রামের মোঃ আব্দুর রহমান জানান, আমি খাষকাউলিয়ার চরে ১০ বিঘা জমিতে গম বুনেছি, ভালো হয়েছে আল্লাহ কোনো বিপদ-আপদ না দিলে লাভবান হতে পারবো ! দামও ভালো আছে ৷
রবিবার (৩০ জানুয়ারি)খাষশাহজানী হাটে প্রতি মন ১ হাজার ২০০ শত থেকে ১ হাজার ৩০০ শত টাকায় গম বিক্রি হয়েছে ৷
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ জেরিন আহমেদ বলেন, চৌহালী উপজেলা যমুনা নদী বিধৌত ভাঙ্গন কবলিত এলাকা হলেও গম চাষের জন্য উপযোগী। দাম ও ফলন ভাল পাওয়া যায় । নিবিড় প্রশিক্ষণ নিয়ে সঠিক সময়ে বীজ রোপণ করে গম চাষে লাভবান হয়েছে চৌহালীর কৃষকরা।
তিনি আরও বলেন,এবছর ১হাজার ৫০০ জন কৃষককে প্রোনোদনা প্রত্যেকে ২০কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি,১০ কেজি এমওপি দেয়া হয়েছে ৷
#চলনবিলের আলো / আপন