আশরাফুজ্জামান সরকার,গাইবান্ধাঃ-
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গাইবান্ধায় অতিরিক্ত যাত্রী বহনের মিথ্যা অভিযোগে এনে জান্নাত পরিবহন আটক করে পুলিশের চাঁদা দাবীর প্রতিবাদে বুধবার দিবাগত রাত ১১ টায় পলাশবাড়ী-গাইবান্ধা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এসময় পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদার রহমান উত্তেজিত শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিলে শ্রমিক উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায়। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। চাঁদা দাবী ও শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশের প্রতিবাদে ১৮ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার শ্রমজীবী সমবায় সমিতির কার্যালয়ে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রমিকদের ডাকে সংবাদ সম্মেলনে গাইবান্ধা জেলা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন(রেজিঃ নং- ৪৯৪) এর সভাপতি মোঃ আবদুস সোবহান বিচ্ছু ও সাধারন সম্পাদক গোলাম সরোয়ার প্রধান বিপ্লব লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তারা লিখিত বক্তব্যে জানান,প্রতিদিনের ন্যায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে গাইবান্ধা থেকে চট্রগ্রাম গামী জান্নাত পরিবহনের একটি বাস ২৬ জন যাত্রী নিয়ে বুধবার ১৭ জুন রাত ১০ টার দিকে গাইবান্ধা থেকে রওয়ানা দিলে তুলশিঘাট নামক স্থানে পৌছে। এসময় গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশ চেকপোষ্টে বাসটি আটক করে। পুলিশ গাড়ীর কাগজ পত্র যাচাই করে সঠিকতা থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রী বহনের মিথ্যা অভিযোগ এনে ২ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে গাড়ীটি আটক করে রাখে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়। এই খবর দ্রুত উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে ওই রাতেই শ্রমিকরা পলাশবাড়ী-গাইবান্ধা সড়ক অবরোধ করে।
খবর পেয়ে পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান মাসুদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত শ্রমিকদের শান্ত না করে মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হলে শ্রমিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদার রহমান প্রকাশ্যে শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক আশরাফুল ইসলামসহ শ্রমিক নেতারা জানান। এসময় ওসির গানম্যান আব্দুল মোমিন শ্রমিক নেতাদের উপর লাঠিচার্জ করার চেষ্টা করেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির বিষয়টি নিয়ে সমঝোতার কথা বললে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। পরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। শ্রমিকনেতা আব্দুস সোবহান বিচ্চু ও গোলাম সরোয়ার প্রধান বিপ্লব জানান, পুলিশ উত্তেজিত শ্রমিকদের শান্ত না করে প্রকাশ্যে গুলি করে মারার নির্দেশ দেয় কিভাবে। আমরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই ওসির অপসারন চাই।
অফিসার ইননচার্জ মাসুদার রহমান মাসুদ জানান,রাস্তা অবরোধ করে অরাজকতা সৃষ্টিকারী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশের এহেন ঘটনার প্রতিবাদে ও ওসি’র অপসারণের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, উল্লেখিত ঘটনার সমাধান না হলে শ্রমিক ফেডারেশন এর নির্দেশ মোতাবেক তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও শ্রমিক নেতারা হুঁশিয়ারি দেন। এসময় অসংখ্য শ্রমিক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।