আশরাফুজ্জামান সরকার, গাইবান্ধাঃ-
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া মানবিক সহায়তার তালিকায় গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের ১১নং খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের স্ত্রী-মেয়ে ও স্বজন এবং স্বচ্ছল-বিত্তশালীদের নাম অর্ন্তভুক্তের ঘটনা তদন্তে সত্যতা পেয়েছে জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটি। এছাড়া সহায়তাপ্রাপ্তদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, তালিকায় নানা অনিয়মের সঙ্গে চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী শামীমের সম্পৃক্ততার বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণ উঠে এসেছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার তালিকায় নানা অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি ও সুবিধাভোগীদের কাছে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার করে বিভিন্ন গণমাধ্যম। এছাড়া প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
বিষয়টি নিয়ে জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। পরে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে মাঠে নামেন জেলা ও সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জুন) বিকেলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা স্থানীয় সরকারের গাইবান্ধার উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) মোছা. রোখছানা বেগম এ তথ্য করে বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সরেজমিন তদন্তে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে যা যা পাওয়া গেছে তাই তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সব তথ্য-উপাত্ত অনুসন্ধান শেষে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরী করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন তিনি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন জানিয়ে আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি’।
তবে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন জানান, গণমাধ্যমের খবরে খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নে মানবিক সহায়তার তালিকায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি এবং সুবিধাভোগীদের কাছে অর্থ আদায়ের অভিযোগ তদন্তে প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পাঠানো হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ এবং তদন্ত প্রতিবেদনের সার্বিক পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে রাজি জননি তিনি।
উল্লেখ্য- সাদুল্লাপুরের ১১ নম্বর খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের অনেক কর্মহীন ও দুস্থ-অসহায়দের বাদ দিয়ে ৫৯৪ জনের নাম অর্ন্তভূক্ত হয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার তালিকায়। কিন্তু সেই তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম-স্বজনপ্রীতি আর নয়-ছয়ের অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, ‘চা-পান’ খাওয়াসহ নানা অজুহাতে চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী ও তার লোকজন সুবিধাভোগী অনেকের কাছে টাকা আদায়ের অভিযোগ করেন একাধিক ভুক্তভোগী। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী।