সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২১ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :

এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল, রোগীদের ভোগান্তি *করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহে টেকনোলজিষ্ট সংকট

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০, ৫:৪৬ অপরাহ্ণ

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
টেকনোলজিস্ট সংকটের কারনে বরিশালে করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের সেবা প্রদান বিলম্বিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এ কারণে গত কয়েকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম।
ফলে চরম বিপাকে পরেছেন বরিশাল বিভাগের মধ্যে একমাত্র করোনার হটস্পট নগরীর বাসিন্দারা। সিটি কর্পোরেশেনের স্বাস্থ্য বিভাগ নমুনা সংগ্রহ বন্ধ রাখার পর থেকে রোগীরা নগরীর মধ্যে থাকা শেবাচিম হাসপাতাল ও সদর জেনারেল হাসপাতালের স্মরনাপন্ন হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, শেবাচিম হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক রোগীদের পরামর্শ দিলেও নানান অযুহাতে করোনা ভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষার নমুনা প্রদানের জন্য সদর জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আর রোগীরা এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে পোহাচ্ছেন নানান ভোগান্তি।

নগরীর মুন্সি গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, তিনি কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। সুস্থ্য না হওয়ায় তিনি শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হওয়ার পর সেখান থেকে করোনা ভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেয়া হয়। এরপর একই হাসপাতালে নমুনা দিতে গেলে তাকে সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

হাসপাতালের টেকনোলজিষ্ট মোঃ নওয়াব আলী জানান, গত কয়েকদিন ধরে শেবাচিম হাসপাতালের বহিঃবিভাগের টিকিট নিয়ে অসংখ্য রোগীরা নমুনা দেয়ার জন্য সদর জেনারেল হাসপাতালে আসছেন। তিনি আরও জানান, একজন টেকনোলজিষ্টের পক্ষে প্যাথলজির স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি একসাথে অনেক রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছেনা।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন বলেন, প্রতিনিয়ত সক্ষমতার দ্বিগুন নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশ হাসপাতালের নমুনা সংগ্রহের দায়িত্বরতরা অসুস্থ্য হওয়ার পর হাসপাতালের ওপর চাঁপ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এখন সক্ষমতার অধিক নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছেনা, ফলে কিছু লোক সদর জেনারেল হাসপাতালে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, পুরতান অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী হাসপাতালের সাত জন টেকনোলজিষ্টের মধ্যে রয়েছে পাঁচজন। যারমধ্যে একজনকে দিয়ে নমুনা সংগ্রহের কাজ করানো হচ্ছে। এছাড়া দৈনিক মজুরী ভিত্তিতে চারজন স্বেচ্ছাসেবক দেয়া হয়েছে নমুনা সংগ্রহের কাজে। একজন নমুনা সংগ্রহকারীকে দিয়ে তিন শিফটে কাজ করানো সম্ভব নয় জানিয়ে পরিচালক বলেন, এ মুহুর্তে প্রধান নমুনা সংগ্রহকারী বিভূতি ভূষণ অসুস্থ্য হয়ে পরলে এ হাসপাতালের অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে।

সিটি কর্পোরেশনের ডাঃ শুভ্র খন্দকার বলেন, অতিসস্প্রতি আমাদের তিনজন টেকনোলজিষ্টের করোনা পজেটিভ হওয়ায় নমুনা সংগ্রহের কাজটি আপাতত বন্ধ রয়েছে। তারা সুস্থ্য হলে আবারও এ কাজ শুরু করা হবে।

জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, মূলত গোটা জেলায় টেকনোলজিষ্টের সংকট রয়েছে। বরিশালের ১০টি উপজেলার মধ্যে জেনারেল হাসপাতালসহ সাতটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাতজন টেকনোলজিষ্ট রয়েছে। হিজলা, মুলাদী ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় কোন টেকনোলজিষ্ট নেই। তবে করোনার নমুনা সংগ্রহের জন্য ওই তিন উপজেলায় অন্য স্টাফদের প্রশিক্ষন দিয়ে বিকল্পভাবে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, শেবাচিম হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ ও জেলায় মিলিয়ে যেহেতু ২৪ জন টেকনোলজিষ্ট রয়েছে, সেখানে পিসিআর ল্যাবের ওপর গুরুত্ব দিয়ে জনবল নিয়োজিত করা উচিত।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ বাসুদেব কুমার দাস বলেন, নতুন একজন টেকনোলজিষ্ট জেলা সিভিল সার্জনকে দেয়া হয়েছে। সে তার সুবিধামতো জায়গায় প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করবেন। এছাড়া বর্তমান সংকট মোকাবেলায় পাশ করা টেকনোলজিষ্ট দিয়ে আপাতত স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কিংবা দৈনিক মজুরী ভিত্তিতে কাজ করানোর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর