বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ৫০শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসায় সেবায় সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় ক্ষুদে বিজ্ঞানী শুভ কর্মকারের তৈরি রোবট ‘সেবক’। রোবটের কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেম।
সোমবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোভিড-১৯ রোগীর সেবা দিতে ক্ষুদে বিজ্ঞানীর আবিস্কার করা রোবট ‘সেবক’ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন শুভ কর্মকার।
খবর পেয়ে হাসপাতাল পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেম। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন।
কলেজ ছাত্র শুভ কর্মকার মহামারী করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবায় নতুন উদ্ভাবিত এই রোবটের নাম রেখেছেন ‘সেবক’। চিকিৎসাসেবায় কাজ করবে বলে এর নাম সেবক রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্ষুদে বিজ্ঞানী শুভ কর্মকার। শুভ জানায়, চিকিৎসা ক্ষেত্রে সরাসরি সহযোগিতার জন্যই তার এই প্রচেষ্টা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন এর অফিস কক্ষ থেকে রোবট সেবকের মাধ্যমে সরাসরি রোগীর সাথে ভিডিও কলের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করেন। এখানে ডাক্তার যত দূরেই থাকুক না কেন নির্দেশনা মেনে রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করবে এই রোবট।
শুভ কর্মকার আরও জানায়, তার আবিস্কৃত রোবট শুধু চিকিৎসা সেবায় অবদান রাখবে না, পাশাপাশি রোগীর অক্সিজেন সিচুরেশন কমে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উৎপাদন করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারবে। একই সঙ্গে ঔষধ আনা-নেওয়া, অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে দেওয়া, রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসার ঔষধ সরবরাহ করা, সংক্রমিত রোগীর বর্জ্য তার শরীরে থাকা ইউভি রশ্মির মাধ্যমে জীবানুমুক্ত করতে পারবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল মামুন বলেন, সারাবিশ্ব করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করছে। এমনভাবে একটি রোবট তৈরি করা হলে সে প্রকৃত পক্ষেই ডাক্তার এবং রোগীর মধ্যে যোগাযোগের একটি মাধ্যম হয়ে কাজ করতে পারবে। ‘সেবক’ সরাসরি রোগীর কাছে যেতে পারবে। তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে সঙ্গহীন রোগীকে সঙ্গ দিতে পারবে। ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুক রোগীর সর্বশেষ অবস্থা সরাসরি দেখতে পারবে, রোগীর সঙ্গে কথা বলতে পারবে এবং প্রেসক্রিপশন দিতে পারবেন চিকিৎসকরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেম বলেন, বর্তমান প্রযুক্তির যুগে ভিডিও কলে ডাক্তার এবং রোগী কথা বলতে পারেন। কিন্তু করোনায় সংক্রমিত রোগীর কাছে কেউ সহসাই যেতে চান না। এক্ষেত্রে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে রোবট ‘সেবক’। কারণ কোনো রোগীর অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে রোগীকে অক্সিজেন সরবারহ করতে পারবে। এছাড়াও রোগীর বর্জ্য রোবট সেবকের শরীরে থাকা ডাস্টবিনে ফেলা হলে ইউভি রশ্মির মাধ্যমে তা জীবানুমুক্ত করে ফেলবে। সেক্ষেত্রে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি নেই। রোবট ‘সেবক’ বৃহৎ পরিসরে বাস্তবায়ন করা হলে করোনা মোকাবেলা সহজ হবে। রোগী তার প্রয়োজনীয় সেবা পাবে আবার চিকিৎসকও নিরাপদ দূরত্বে থেকে চিকিৎসা দিতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, তার উদ্ভাবন ও এগিয়ে যাওয়ায় আমরা গর্বিত। শুভ কর্মকারের করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবায় আবিস্কৃত রোবটিকে আরও আধুনিকভাবে তৈরি করার লক্ষ্যে সে চাইলে যে কোন সহযোগিতা করা হবে।
#চলনবিলের আলো / আপন