শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

নাগরপুরে বেগুনি রঙের ধানে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

নিজস্ব  প্রতিবেদকঃ
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ধান চাষে ভিন্নতা এনেছে কয়েকজন ধান চাষী। বেগুনি পাতায় মোড়া ধান ক্ষেতে সবুজের ধান ক্ষেতকে যেন হাড় মানিয়েছে। এতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে স্থানীয়সহ আশ-পাশের উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের মাঝে। সবুজ ধান ক্ষেতের মাঝখানে বেগুনি রঙের পাতার ধান। চোখ ধাধাঁনো অপরুপ বেগুনি ফসলের মাঠ। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন প্রতিদিন লকডাউনে বেকার থেকে কেউ বা পায়ে হেটেই দেখতে আসছে ভিন্ন প্রজাতির বেগুনি পাতায় মোড়া ধান ক্ষেত। কেউ বা ছবি তুলছে আবার কেউ বা চাষীর কাছ থেকে গল্প শোনতে আসছে এ ধান চাষের।

সবুজ আর সোনালি ফসলটি যদি বেগুনি রঙের হয় তাহলে সোনালী ধানের দেশে বিষয়টি একটু সাড়া পড়ার মতই। যে কারো প্রথম দেখায় ভাবতে অবাক লাগবে। এমনি বেগুনি পাতার ধান চাষ করে অবাক করে দিয়েছেন উপজেলার বেগুনি রঙের ধান চাষীরা।

উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের ঘিওরকোল মধ্যপাড়ার তুষ্টু লাল সরকারের ছেলে বেগুনি রঙের ধান চাষী দুলাল চন্দ্র সরকার বলেন, প্রথম এক কেজি বেগুনি ধানের বীজ তাঁর বন্ধুর কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। এক কেজি ধান বোরো মৌসুমে রোপন করে প্রায় চার মন ধান পেয়েছিলেন। স্বাদে প্রায় আমন ধানের ন্যায়। এবার বিভিন্ন চাষী আগ্রহ প্রকাশ করায় তাদের বীজ দিয়েছেন নতুন জাতের ধান চাষের জন্য। পাশা-পাশি তার ভাই কৃত সরকারকেও এ ধান চাষে বীজ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।

তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন উপজেলার কোন কৃষি কর্মকর্তা সঠিক পরামর্শ দিতে এখনো আসেনি। তাঁর বন্ধু একজন কৃষি অফিসার। যতটুকু সহযোগিতার তার কাছ থেকেই নিয়ে ভিন্ন জাতের এ ধানের চাষ তিনি শুরু করেছেন।

উপজেলার বেকড়া এলাকার সোরহাব মিয়ার ছেলে ধান চাষী আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, তিনি পেশায় পশু চিকিৎসক। সখের বসে এক নেতার কাছ থেকে এ বছর এক কেজি বেগুনি ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। বীজ তলা নিজেই তৈরী করে বেগুনি রঙের ধানের চারা পরিকল্পিত ভাবে মাটি ভেদে ফলন কেমন হয় তা পরীক্ষা করার জন্য বিভিন্ন ক্ষেতে বোরো ধানের পাশাপাশি ওই ধানের চারা রোপন করেছেন। ফলন বাম্পার হবে বলে আশা করছেন তিনি।

তবে তারও অভিযোগ নতুন প্রজাতির ধান বিধায় উপজেলার কৃষি অফিসের সহযোগিতা চাইলে তাঁরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ নন বলে এড়িয়ে যান। নতুন জাতের ধান উপজেলায় রোপন করা হলেও ধান রোপনের প্রায় তিন মাস পেরুলেও তার ধানি জমিতে কোন কৃষি অফিসার আসেনি বলেও অভিযোগ করেন ওই চাষী। তবে তাদের সহযোগিতা না পেলেও থেমে নেই তার নতুন জাতের ওই ধান চাষের। ইতিমধ্যে ওই ধানের ছড়াও বের হচ্ছে বলেও দেখান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন বিশ্বাস তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানান, নতুন বিদেশী এ জাতের ধান নিয়ে গবেষণা চলছে। ফলনের বিষয়ে আবহাওয়ার অনুক‚লে কিনা সেটিও পর্যাবেক্ষণ করতে হবে। পুরোপুরি ধারনা এবং পরীক্ষা মূলক কোন রেজাল্ট না পেলে পরামর্শ দেওয়া ঠিক হবে না। অভিযোগকারীর সাথে অফিসে সাক্ষাৎকালে তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং তার ধানি জমিতে কিছুদিন পর যাওয়ার জন্য তিনি নিজেই বলেছেন। তবে ফলন প্রতি হেক্টরে প্রায় তিন মেট্রিন টন ধান উৎপাদন হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে তিনি বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
তিনি আরও বলেন, রোবো ২৯ জাতের ধানের তুলনায় এর ফলন অনেক কম। কত দিনের মধ্য ধান কাটা যায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা পোকা মাকড়ের আক্রমণ ও পুষ্টিগত দিক কেমন তা গবেষণায় প্রকাশ না পাওয়ায় এ বিষয়ে কোন মন্তব্য তিনি করতে পারবেন না বলেও জানান ওই কৃষি কর্মকর্তা।

 

#CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর