ঘন কুয়াশার চাঁদর মুড়ি দিয়ে এসেছিল শীত। তীব্র শীতে শত বাঁধা উপেক্ষা করে কৃষকেরা বুকভরা আশা নিয়ে এ বছর আবাদ করেছে সরিষা। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার প্রত্যেকটি মাঠে গেলেই চোঁখে পড়ে অবারিত সরিষার ক্ষেত। যেদিকে দু’চোখ যায় শুধু পাকা হলুদের সমারোহ। আবার কিছু জমির সরিষা তুলে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে কৃষক। এ বছর কৃষক সরিষার আবাদ করেছে প্রাণ খুলে। অল্পদিনের আবাদে কৃষকদের বেশি একটা খরচ হয় না বলে তাঁরা সরিষার আবাদ করে থাকে। আমন ধান উঠার পর পর কৃষকেরা জমি চাষ করে অথবা অনেকেই ধানের জমিতে চাষ ছাড়াই ছিটিয়ে সরিষার আবাদ করে থাকে।
কথা হয় উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের বড় বিশাকোল গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিনের সাথে। তিনি গত বছর সাড়ে চার বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছিল। ফলন ভাল হয়েছিল তাই এ বছর প্রায় ছয় বিঘা জমিতে সে সরিষার আবাদ করেছে। কিছু জমির সরিষা পাক ধরে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। আবার কিছু জমির সরিষা তুলে জমির মাঝখানেই মাড়াই করছে। যদি আবহাওয়ার ভালো থাকে তাহলে কৃষকরা বুকভরা আশা বেঁধেছে নিজ নিজ চাহিদা মেটানোর পর বিক্রি করে লাভবান হবার।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘনো কুয়াশা ও প্রচন্ড শীত থাকলেও সরিষার ফলন ভাল হয়েছে। এছাড়া এ উপজেলার মাটি সরিষার আবাদের জন্য বিশেষ উপযোগী। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরিষা চাষীদের যথাযথ পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন মাঠে থেকে। চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এ বছর ৬টি ইউনিয়নে ১০ হাজার ১০০ মে.টন সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা রাখছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালে ৫ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছিল এবং উৎপাদন হয়েছিল ৮ হাজার ১৮৫ মে.টন সরিষা। এ ছাড়াও ২০২৪ সালে ৬ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছিল এবং উৎপাদন হয়েছিল ৯ হাজার ৫২৭ মে.টন সরিষা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা: শারমিন জাহান জানান, বিগত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ভাঙ্গুড়ার ৬টি ইউনিয়নে সর্বাধীক উৎপাদন হবে বলে আশা রাখছি। উপজেলার বিভিন্ন গ্রমে সরিষা উঠানো প্রায় শেষের দিকে। কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে অল্প দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ সরিষা উঠানো শেষ হবে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সর্বোক্ষণ পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।