ঘন কুয়াশার চাঁদর মুড়ি দিয়ে এসেছে শীত। শত বাঁধা উপেক্ষা করে কৃষকরা বুকভরা আশা নিয়ে এ বছর আবাদ করেছে সরিষা। সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার প্রত্যেকটি মাঠে গেলেই চোঁখে পড়ে অবারিত সরিষার ক্ষেত। যেদিকে দু’চোখ যায় শুধু পাকা হলুদের সমারোহ। কৃষক সরিষার আবাদ করেছে প্রাণ খুলে। অল্পদিনের আবাদে কৃষকদের বেশি একটা খরচ হয় না বলে তাঁরা সরিষার আবাদ করে থাকে। আমন ধান উঠার পর পর কৃষকরা জমি চাষ করে অথবা অনেকেই ধানের জমিতে চাষ ছাড়াই ছিটিয়ে সরিষার আবাদ করে থাকে।
এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় উপজেলার উত্তর খাষকাউলিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নানের সাথে। গত বছর দেড় বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছিল। ফলন ভাল হয়েছিল। এ বছর প্রায় ২বিঘা জমিতে সে সরিষার আবাদ করেছে। পাক ধরে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে প্রত্যেকটি সরিষার গাছে । কোনো কোনো জমি থেকে সরিষার গাছ উঠাতেও শুরু করেছে ৷ যদি আবহাওয়ার তেমন কোন অসুবিধা না হয়, তাহলে কৃষকরা বুকভরা আশা বেঁধেছে। নিজ নিজ চাহিদা মেটানোর পর বিক্রি করে অনেক লাভবান তারা ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলা ৭টি ইউনিয়নে ২ হাজার ২শ ১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৩ হাজার ৯৪ হেক্টর । এর মধ্যে দেশী জাত ও উচ্চফলনশীল বারি সরিষা-১৪, ৮২০ হেক্টর, বারি সরিষা-১৫, ২০৫ হেক্টর, বারি সরিষা-১৮, ০৫ হেক্টর,টরি সরিষা- ৭, ১ হাজার ১১০ হেক্টর ও রাই -৫, ৭০ হেক্টর জাতের সরিষার আবাদ করেছে কৃষকরা। ঘনো কুয়াশা ও প্রচন্ড শীত থাকলেও সরিষার ফলন ভাল হয়েছে।প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ১.৪ মে.টন ৷ এছাড়া এখানকার মাটি সরিষার আবাদের জন্য বিশেষ উপযোগী। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরিষা চাষীদের যথাযথ পরামর্শ ও সহযোগীতা করছেন মাঠে থেকে ।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ জেরিন আহমেদ জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৭টি ইউনিয়নে প্রায় ১১ শ’ কৃষকের মাঝে কৃষি উপকরণ, উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা বীজ ও রাসায়নিক সার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়েছিলো ৷ এ বছর উপজেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ১৯.২০ হেক্টর, সরিষা চাষ হয়েছে প্রায় ২ হাজার ২৩০ হেক্টর, অর্জন হয়েছে ২ হাজার ২৫ ৷ তিনি আরও জানান, এ বছর ৭টি ইউনিয়নে ২ হাজার ২১০ মে.টন সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা রাখছি ৷ ইতিমধ্যে অর্ধেকের বেশি সরিষা উঠানো হয়েছে, কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে আগামী সাপ্তাহের মধ্যে পুরাপুরি উঠানো হবে ৷ কৃষি বিভাগ থেকে সর্বোক্ষণ পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
CBALO/আপন ইসলাম