তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের পলাশী গ্রামের জমিজমা হীন ছাকোয়াত আলী (৪৫)। সারাজীবন দিনমজুরের কাজ করে তিনি সারে ১৬ শতক জমি কিনেছেন। সেই জমিটুকোও নাকি বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন মুক্তা প্রভাব খাটিয়ে ও মারধর করে জোরপূর্বক দখল নিতে চাইছেন! (৪ জানুয়ারি) সোমবার এসবের প্রতিকার চেয়ে তাড়াশ থানায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ঐ দিনমজুর। এদিকে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেও এদিন তাড়াশ থানাতেই উল্টো অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন মুক্তা। উভয় পক্ষের লিখিত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলে আশিক।
অভিযোগ সূত্র ও সরেজমিনে জানা গেছে, দিনমজুর ছাকোয়াত আলী তার নিকটবর্তী বস্তুল গ্রামের আব্দুল মতিন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২০১৪ সালে পলাশী গ্রামের দক্ষিণ মাঠের সারে ১৬ শতক জমি কিনে নেন। এটুকো জমিতে সে যথারীতি ধানের আবাদ করে আসছিলেন। এদিকে বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন মুক্তাও আব্দুল মতিনের কাছ থেকেই ২০১৯ সালে ২১ শতক জমি কিনেছেন। সেসব জমিও দিনমজুর ছাকোয়াত আলীর কেনা জমির আইল ঘেষে।
অভিযোগ সূত্র ও সরেজমিনে আরো জানা যায়, (৩ জানুয়ারি) রবিবার দুপুরের দিকে চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন মুক্তা কয়েকজন শ্রমিককে দিয়ে ছাকোয়াত আলীর জমিতে জোরপূর্বক চাষাবাদের জন্য পরিচর্যার কাজ করাতে থাকেন। তখন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে চেয়ারম্যানের সহদর ভাই মনি ও ভাগ্নে আল্মাহমুদ, জাল্মামুদসহ বেশ কয়েকজন মিলে ছাকোয়াত হোসেন, তার স্ত্রী হোসনেয়ারা খাতুন ও তার দুই ছেলে তারিকুল ও ছানোয়ারকে জমির মধ্যেই বেধরক মারধর করেন।
ছাকোয়াতের স্ত্রী হোসনেয়ারা খাতুন বলেন, চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন মুক্তার উপস্থিতিতেই তার লোকজন মারধর করেছেন। চেয়ারম্যান নিজেও তার ছোট ছেলে ছানোয়ারকে (১৪) কুসুম্বী-পলাশী আঞ্চলিক সড়কের উপর ধরে এলোপাথাড়ি লাথি মেরেছেন। সর্বপরি তিনি হুমকী দিয়েছেন “জমির দখল নিতে বাধা দিলে সেচ যন্ত্র চুরির মামলা দিয়ে বাড়ি ছাড়া হবে। ”
দিনমজুর ছাকোয়াত হোসেন বলেন, ২০১৪ সালে জমিটুকো কেনা হলেও খাজনা-খারিজ করা হয়ে ওঠেনি। পরে শত চেষ্টা করেও আর তা করা সম্ভব হয়নি। কারণ, চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন মুক্তা এরই মধ্যে ঐ জমির খাজনা-খারিজ করে নিয়েছেন।
চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন মুক্তা বলেন, তার খাজনা-খারিজ করা জমিতে ছাকোয়াতরা জোরপূর্বক আইল ভেঙে দিচ্ছিলেন। তিনি শুধু তাদেরকে সরিয়ে দিয়েছেন মাত্র।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলে আশিক বলেন, উভয় পক্ষই অভিযোগ করেছেন। আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।