রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০২:২৩ অপরাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :
কক্সবাজার সদর উপজেলা জাসাস এর পরিচিতি সভা, জাসাস বিএনপি গোলাপ ফুল বললেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরামের নির্বাহী মহাসচিব নির্বাচিত হলেন আনোয়ার হোসেন মানিকগঞ্জ ১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর মোটরসাইকেল শোডাউন নাটোর ইমার্জিং কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন নাটোর রেড টিম আটোয়ারীতে ‘মানিকপীর সোনালী কিন্ডার গার্টেন’-এর কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি ও সনদ বিতরণ আলীকদমে মাতামুুহুরী নদীতে পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু ভৈরব নদীতে নৌকা বাইচে উৎসবের জোয়ার, দর্শনার্থীর ঢল সাপাহারে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স জনবীমী’র পিঠা ও আনন্দ উৎসব 

জামালপুরে অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামে কোটি টাকার চাদাবাজীর অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৩২ অপরাহ্ণ

কামরুজ্জামান কানু,জামালপুর :

বাংলাদেশ অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামে প্রতি মাসে অন্তত দেড় কোটি টাকা চাঁদা উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে। শ্রমিকের কল্যাণের নাম দিয়ে বিপুল অঙ্কের চাঁদা উত্তোলন করা হলেও শ্রমিকের কল্যাণে কোন অর্থই ব্যয় করা হয়না। চাঁদার বিপুল অঙ্কের অর্থ চলে যাচ্ছে শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নেতাদের পকেটে।

অটো বাইক চালকদের অভিযোগ, জামালপুর পৌরসভা এলাকাসহ জেলার ৭টি উপজেলায় প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার অটো বাইক চলাচল করে। জামালপুর শহরে ৬টি পয়েন্টসহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকশ পয়েন্টে অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামে প্রতি পয়েন্টে ১০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। প্রতিদিন একটি অটো বাইক চালককে চাঁদা দিতে হয় ৫০ থেকে ৭০ টাকা।

চাঁদা না দিলে অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নিয়োজিত চাঁদাবাজরা লাঠি দিয়ে গাড়ীতে বাড়ি দেয়-এত গ্লাস ভেঙ্গে দেয়। অনেক সময় চালকদের মারধর ও লাঞ্ছিত করে। এতে যাত্রীরা চরম বিব্রতকর অবস্থায় পরেন। প্রকাশ্য চাঁদাবাজি চললেও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন টু-শব্দ করেন না।

বেশ কয়েকজন চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারি দলের একজন শীর্ষ নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে এসব চাঁদাবাজি চলছে। করোনা পরিস্থিতির আগে প্রতি পয়েন্টে চাঁদা দিতে হতো ২০ টাকা। করোনার কারনে চাঁদাবাজরা চাঁদার পরিমান অর্ধেক করেছে। এখন প্রতি পয়েন্টে চাঁদা দিতে হয় ১০ টাকা। পয়েন্টে পয়েন্টে চাঁদাবাজির কারণে অটো বাইক চালকরা অতিষ্ট হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির জেলার বিভিন্ন স্থানে শাখা কমিটি দেওয়ার নামেও হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।

জামালপুর শহরের প্রধান সড়কে গেইটপাড়ে কথা হয় অটো চালক হুরমুজ আলীর সাথে। তিনি বলেন, অটো বাইক চালিয়ে সারাদিনে ইনকাম হয় ৭/৮শ টাকা। এর মধ্যে অটোর মালিককে দিতে হয় ৩০০ টাকা। প্রতিদিন অটোর ব্যাটারি চার্জের জন্য ব্যয় হয় আরো ১০০ টাকা। এর মধ্যে চাঁদাবাজদের দিতে হয় ৭০/৮০ টাকা। সারাদিন কষ্ট করে ঘরে টাকা যায় ৩/৪শ টাকা। এ টাকা দিয়ে ত সংসার চলে না।

শহরের তমালতলায় কথা হয় অটো চালক বিল্লাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি হলেও কোন মহল কিছুই বলেন না। সবার মুখ বন্ধ কেন। আসলে গরীবের পক্ষে কেউ নাই। চাঁদাবাজরা মনে হয় সবাইকে ম্যানেজ করেছে।

অটো চালক কাজিম উদ্দিন বলেন, শ্রমিকের কল্যাণের নামে চাঁদাবাজি হলেও কোন শ্রমিকের সমস্যা হলে বা দুর্ঘটনা হলে চাঁদাবাজদের কাউকে খোঁজে পাওয়া যায় না। শ্রমিকের কল্যাণের কথা বলে চাঁদা তুলে তারা নিজেরা মোটা তাজা হচ্ছে। সরকারি দলের শীর্ষ একজন নেতার নাম ভাঙ্গায় তারা। তবে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন সরকারি দলের শীর্ষ ওই নেতা এর সাথে জড়িত না। তবে তিনি আবার কিছু বলেও না। বিষয়টি রহস্যজনক।

জানা গেছে, বাংলাদেশ অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি রেজিঃ নং এস-১১৩৮৭ জামালপুর জেলা শাখার প্রধান কার্যালয় করা হয়েছে শহরের রানীগঞ্জ বাজারে পৌরসভার সুপার মার্কেটে। এখান থেকে পরিচালিত হয় জেলার সব জায়গার অটো বাইকের চাঁদাবাজির কার্যক্রম।

বাংলাদেশ অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি পদে আছেন জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ও পৌর শ্রমিক লীগের আহবায়ক মোজাম্মেল হক। আর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন পৌর শ্রমিক লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য বেলাল হোসেন।

চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলতে রাজি হননি অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি মোজাম্মেল হক।

তবে অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পুরো জেলায় তারা চাঁদাবাজি করেন না। শহরের ৬টি পয়েন্টে তারা রসিদ দিয়ে চাঁদা নেন। রসিদ বই বিক্রী করা হয়। ১০০ পাতার প্রতিটি বই বিক্রি করা হয় ৩০০ টাকা করে। চাঁদার টাকা অটো চালকদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়। কোন অটো দুর্ঘটনা হলে বা কোন ঘটনায় থানা পুলিশ আটক করলে চাঁদার টাকা ব্যয় করে সমস্যা সমাধান করা হয়। কোন শ্রমিক মারা গেলে বা দুর্ঘটনায় আহত হলে তাদেরকেও অনুদান দেওয়া হয়।

অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এমন প্রত্যাশা জামালপুর জেলার অটো বাইক চালকদের।

CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর