প্রদীপ কর্মকার, তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ:
চলনবিল এলাকা জুড়ে সরিষার ক্ষেত হলুদ ফুলে একাকার হয়ে গেছে। কৃষকরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও। কিন্ত যত্রতত্র পুকুর খনন করার ফলে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এ বছর সরিষা আবাদ কিছুটা কম হয়েছে। কারন মাঠ থেকে পানি নামতে দেরি হওয়ায় ও কোন কোন মাঠে জলাবদ্ধতার জন্য জমির জো আসতে দেরি হয়েছে। জানা যায়, এ বছর চলনবিলের উল্লাপাড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, শাহজাদপুরসহ উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর সরিষা আবাদে তেমন কোনো পোকার আক্রমণ না থাকায় কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন। তুলনামূলক এ বছর সরিষার আবাদ অনেক ভালো হয়েছে। তাছাড়া সময়মত সার-কীটনাশক ব্যবহারের কারণে সরিষার আবাদ করতে কৃষকের কোনো প্রকার বেগ পেতে হচ্ছে না। তবে এ বছর তাড়াশ উপজেলায় গত বছরের তুলনায় সরিষা আবাদ অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। এছাড়া তুলনামূলক কম আবাদ হয়েছে।
অনেক কৃষক জানান, উপজেলা কৃষি অফিসে লোকজন নিজে মাঠে গিয়ে কৃষকের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলনবিল অধ্যাসিতু তাড়াশ উপজেলায় ৫ দফা বন্যার পানি আসায় মাঠে থেকে পানি নামতে দেরি হয়েছে। আবার মাঠের মধ্যে জলাবদ্ধতার কারণেই অনেকেই সরিষা বিজ ফেলতে পারেননি। তাই এ বছর সরিষা আবাদ কম হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় কম। এ বছর এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩শত ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন জানান বলেন, এক সময় চলন বিলের কৃষকরা শুধু ইরি-বোরো এক ফসলী আবাদ করে হাজার হাজার হেক্টর জমি পতিত রাখত। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে এ অঞ্চলের কৃষকদেরও বুদ্ধির বিকাশ ঘটেছে। তাড়াশ উপজেলার ধাপ-তেতুলিয়া গ্রামের কৃষক কামাল হোসেন বলেন, ৭ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি কিন্তু বিলের পানি সঠিক সময়ে না নামায় অনেক দেরিতে সরিষা বীজ রোপন করেছি।
তাই গত বারের চেয়ে এ বছর হয়তো খুব ভালন ফলন হবে না। বাশবাড়িয়া গ্রামের মামুন হোসেন জানান, চার বিঘায় সরিষা আবাদ করেছি। আশা করছি ফলনও ভাল হয়েছে। বিশেষ করে এখন পর্যন্ত কোনো পোকার আক্রমণ দেখা দেয়নি। সব কিছু ঠিক থাকলে এবার প্রতি বিঘা জমিতে ৪-৬ মণ হারে, এমনকি তারও বেশি সরিষা ঘরে তুলতে পারবেন বলে তিনি জানান। তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, এ বছর কৃষককে সরিষা চাষে ব্যাপক সচেতন করা হয়েছে। সরিষা চাষের পদ্ধতি ও পোকার আক্রমন হলে কি করনীয় সে বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করেছেন। তাছাড়া কর্মকর্তারা সব সময় মাঠে থেকে কৃষককে সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছেন।
CBALO/আপন ইসলাম