শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

“আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য” গোপনে নিয়োগের চেষ্টা, তোপের মুখে বন্ধ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪, ৭:১৮ অপরাহ্ণ

আদালতের নিষেধাজ্ঞা, জোষ্ঠ্যতা লঙ্ঘন এবং চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করতে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গুরুদাসপুরের খলিফাপাড়া রেজাউল করিম দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে। শুক্রবার সুপার পদসহ অন্তত ছয়টি পদে গোপনে নিয়োগ দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয় মাদরাসা কমিটি।

জানা যায়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, নিয়োগবোর্ড গঠনসহ নিয়োগ দেওয়ার সব প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে গোপনীয়তা রক্ষা করেই। সর্বশেষ ১৯ এপ্রিল শুক্রবার পাশ^বর্তী বড়াইগ্রামের আহম্মেদপুর ডিগ্রি কলেজে নিয়োগ পরীক্ষা নিতে গিয়ে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা। অভিযোগ উঠেছে মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ওই নিয়োগদানের চেষ্টা করেছেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. মোহাম্মদ আলী। তিনি গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।

মাদরাসা সূত্র জানিয়েছে, ২০১৮ সালের মাদরাসা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী ৬টি পদে নিয়োগ দানের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি। ওই বিজ্ঞপ্তিতে শূণ্যপদে সুপারিনটেনডেন্ট, সহকারি সুপার, এবতেদায়ি প্রধান, পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং সৃষ্টপদে নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে আবেদন আহবান করা হয়। এতে মোট ৪৯ জন প্রার্থী আবেদন করেন। অথচ সুপারিনটেনডেন্ট পদ নিয়ে গুরুদাসপুরের সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন স্থানীয় ব্যক্তি তাছির উদ্দিন। মামলায় ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালত সুপার পদে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন।

সূত্র বলছে, এসব পদে নিয়োগ দিতে ডিজি প্রতিনিধি হিসেবে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) পরিচালক মো. জিয়াউল আহসান, গুরুদাসপুরের মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আখতার, সদস্য সচিব হিসেবে ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুর রউফ, সভাপতি হিসেবে ডা. মোহাম্মদ আলী এবং সুপারের প্রতিনিধি হিসেবে দেলোয়ার হোসেনকে নিয়োগ বোর্ডের জন্য মনোনীত করা হয়।

মামলার বাদি তাছির উদ্দিন বলেন, সুপার পদে নিয়োগদানের বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে গোপনে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী। তাছির উদ্দিন আরও বলেন, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধেও আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। ওই মামলাটিতেও কমিটির বিরুদ্ধে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন গত বৃহস্পতিবার।

এদিকে এসব পদে মনোনীত প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে বেশিরভাগ আবেদনকারীদের পরীক্ষায় ডাকা হয়নি। আবেদনকারীদের মধ্যে মহাসীন আলী, উজ্জল ফকির, আব্দুল মজিদ, সাইফুল ইসলাম, জুয়েল রানাসহ অন্তত ২০জন অভিযোগ করেন, তারা চাকরির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই আবেদন করেন। কিন্তু তাদের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়নি। পরে তারা জানতে পারেন গোপনে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) পরিচালক মো. জিয়াউল আহসান বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কপি তিনি হাতে পাননি। তবে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন এবং আবেদনকারীদের নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ে অবহিত না করাসহ বিভিন্ন ত্রুটির কারণে তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন।

ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুর রউফ বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কথা তিনি জানতেন। তবে সভাপতির নির্দেশেই নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তারা।

গুরুদাসপুরের মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সেলিম আখতার বলেন, নিরাপত্তাজণিত কারণে পাশের উপজেলায় পরীক্ষার ভেন্যু নির্বাচন করা হয়েছিল। সেখানেও তারা নিয়োগ দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।

পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কপি তারা পাননি। বরং স্থানীয় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিকভাবে শক্তি প্রয়োগ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া বানচাল করেছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com