মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১৬ অপরাহ্ন

ই-পেপার

অভয়নগরে কয়লা চোর চক্রের দাপট: জিহাদ সিন্ডিকেট বেপরোয়া

মোঃ কামাল হোসেন, অভয়নগর(যশোর):
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২:৫৭ অপরাহ্ণ

যশোরের অভয়নগর উপজেলার আলীপুর–চেঙ্গুটিয়া এলাকায় গড়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ কয়লা চোর চক্র। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আলীপুর মহাকাল গ্রামের মোয়াজ্জেমের ছেলে জিহাদকে ঘিরেই এ সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শুধু জিহাদ নয়, চেঙ্গুটিয়া ও বালিয়াডাঙ্গা এলাকার আরও কয়েকটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে একইভাবে কয়লা চুরি করে আসছে বলে জানা গেছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, রাতের অন্ধকারে নওয়াপাড়ার সুনামধন্য কয়লা আমদানিকারকদের ড্যাম্পিং ইয়ার্ড থেকে কৌশলে কয়লা চুরি করে থাকে এসব চোর সিন্ডিকেট। চুরি করা কয়লা পরিত্যক্ত ঘর ভাড়া নিয়ে গোপনে মজুত করা হয়, যাতে কেউ টের না পায়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ড্যাম্প তৈরি করে সেসব জায়গা ত্রিফল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার আলীপুর মহাকাল গ্রামে এ আর সিমেন্ট মিলের সামনে ত্রিফল দিয়ে ড্যাম্পিং করে চোরাই কয়লা রাখা, যার বৈধ কোন কাগজ নেই, আর আমডাঙ্গা মজিদ ভ্যান্ডারের ইটের ভাটার সামনে একটি ঘরের মধ্যে চোরাই কয়লা ও ছাই বালু রাখা যেখানে ঘরের মধ্যে রেখে গোপনে কয়লার সাথে ছাই মিশানো হয়ে থাকে।

স্থানীয়রা জানায়, শুধু কয়লা চুরিই নয়, এ চক্র কয়লার সঙ্গে ছাই ও বালু মিশিয়ে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে প্রতারণা করছে। এর ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে নওয়াপাড়া কয়লা ব্যবসায়ীদের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। অনেক ইটভাটা মালিক ইতোমধ্যে নওয়াপাড়া থেকে কয়লা কেনা কমিয়ে দিয়েছেন, ফলে আমদানিকারকরা পড়েছেন চরম সংকটে।

সাংবাদিকরা কাগজপত্র দেখতে চাইলে চক্রের সদস্যরা কোনো বৈধ নথি দেখাতে পারেন না, বরং নানা অজুহাত দেখান, এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের দাবি, চক্রটির রয়েছে রাজনৈতিক ছত্রছায়া, যার কারণে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না; উল্টো ভুক্তভোগীরা নানামুখী হুমকি-হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

এ বিষয়ে জিহাদ দাবি করেন, তিনি বৈধভাবে কয়লা ক্রয় করেন এবং তার কাগজপত্র রয়েছে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়ে তিনি সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কয়লার সঙ্গে ছাই–বালু মিশিয়ে ইটভাটা মালিকদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। তারা বিষয়টি তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অশিষ কুমার বসু বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাচাই–বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সচেতন মহল দ্রুত অভিযানের মাধ্যমে চোর সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর