বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৮:১৭ অপরাহ্ন

ই-পেপার

টেকসই উন্নয়নের জন্য বহুমূখী শিল্প প্রয়োজন – ওমায়ের আহমেদ শাওন

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩, ৯:৪৩ অপরাহ্ণ

শিল্প-কারখানা হলো শিল্পোৎপাদন স্থল। অর্থাৎ পণ্য প্রস্তুতকারক কিংবা প্রক্রিয়াজাতকরণ কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
যেকোন পণ্য উৎপাদন করতে কাঁচামাল বিবেচ্য। কিন্তু এই কাঁচামালের যোগান যদি আমদানি নির্ভর হয়ে থাকে তাহলে সে অনুসারে শিল্প কারখানা দেওয়াটা অনেক কঠিন। সে কারণে এদেশে ভারী ও দামী শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে না। দর্জি বা গার্মেন্টস শিল্পই এদেশে সে সুযোগে স্থান করে নিয়েছে। যার কারণে ভারী শিল্পের আশা আরও বহদূরে পিছিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ মূলত কৃষিপ্রধান দেশ। তবে ধীরে ধীরে পোশাক শিল্প কারখানা প্রভাব ফেলছে। কৃষিজ পণ্য রপ্তানী করে পোশাকের চেয়ে বেশী রেমিটেন্স আসে না। তাই পোশাক প্রধান দেশ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। এক সময়ের কৃষিজ পণ্য সোনালী আঁশ পাট শিল্পও বিলুপ্তির পথে।
করোনার পর থেকে এখনো বিশ্বমন্দার প্রভাব এবং দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যেও জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদান ৩২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ খাতে শ্রমশক্তিও বেড়েছে ২০ শতাংশ।
গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যা, অবকাঠামো ও পরিবেশ সমস্যা, চাঁদাবাজি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা প্রভৃতি থাকার কারণে আরো অধিক শিল্প কারখানা তৈরীর সুযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থানের প্রয়োজন পড়ে। বিগত দশকের তুলনায় বর্তমানে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো একমূখী তথা পোশাক কারখানা হওয়ার কারণে বহুমূখী বিনিয়োগ এর প্রতি শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের আগ্রহ ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে-।
উচ্চশিক্ষিত হয়েও অনেকে পোশাক কারখানা বা দর্জি কোম্পানিতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। যোগ্যতা এবং দক্ষতার তুলনায় বেতন কম হওয়ায় তাদের জীবিকা নির্বাহই যেখানে কঠিন হয়ে পড়ছে, সেখানে সাধারণ শ্রমিকদের তো আরও বেহালদশা।
দেশে যদি গার্মেন্টস শিল্পের বাহিরে বহুমূখী শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে তাহলে দেশের রাজস্ব আয়ে ভারসাম্য বজায় থাকবে। সরকারকে রেমিটেন্সের জন্য শুধু প্রবাসী ও গার্মেন্টস মালিকদের দিকে চেয়ে থাকতে হবেনা। কোন কারণে যদি বিদেশী ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীগণ পোশাক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তখন দেশের উন্নতীর চাকা মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই এখন থেকেই পোশাক শিল্পের প্রতি যে শতভাগ নির্ভরতা আছে, তা কমিয়ে বিভিন্ন উৎপাদনমূখী কারখানা গড়ে তোলা আবশ্যক। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন শিল্পে বিনিয়োগে উদ্যোগী করাতে পারলেই এদেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।
টেকসই উন্নয়নের জন্য এদেশে বহুমূখী শিল্প কারখানা স্থাপন করা প্রয়োজন। আর একমূখী শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে শিল্প কারখানার মালিকরা তাদের ইচ্ছেমত আইন প্রতিষ্ঠা করে শ্রমিকদের ওপর ষ্ট্রিম রোলার চালাবে; এতে সন্দেহ নেই। রীতিমত তারা প্রচন্ড অহংকারী হয়ে উঠবে। সরকারকেও অর্থনৈতিক চাপে বেঁধে ফেলবে। তাতে জনগণের কোন উন্নতী হবেনা বরং পূঁজিবাদ সাম্রাজ্য সৃষ্টি হবে। তাই সকল দিক বিবেচনা করে এদেশের মাঝে বহুমূখী শিল্প কারখানা স্থাপন করা দরকার। এবং লাভের পরিমাণ বিবেচনা করে প্রত্যেক কোম্পানির বেতন কাঠামো সরকার কর্তৃক গেজেট আকারে নির্ধারণ করে দিতে হবে। তাহলে টেকসই উন্নয়নের সুফল জনগণ পাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com