শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫১ অপরাহ্ন

ই-পেপার

গোপনে কিশোরীদের বিক্রি করা নারী দালাল মানছুরা গ্রেপ্তার

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০২৩, ৪:৫৫ অপরাহ্ণ

দরিদ্রতার সুযোগে গ্রামের কিশোরীদের বরিশাল শহরে ভাল বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে ফ্ল্যাট বাসায় দেহ ব্যবসার গোপন আস্তানায় (মিনি পতিতালয়) বিক্রি করা অভিযুক্ত নারী দালাল মানছুরা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মানছুরার কাজ ছিল বিভিন্ন প্রলোভনে কিশোরীদের ফুঁসলিয়ে বরিশালে এনে দেহ ব্যবসার আস্তানায় বিক্রি করে দেওয়া। বিনিময়ে সে ব্যবসার পার্সেন্টেজ পেতেন।

বৃহস্পতিবার সকালে মানছুরাকে গ্রেপ্তার করার সত্যতা নিশ্চিত করে বরগুনার তালতলী থানার ওসি কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু কাজী বলেন, থানায় দায়ের করা মারধরের একটি মামলায় মানছুরা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় জানানো হয়েছে। ওই থানায় (কোতোয়ালি) দায়ের করা মানবপাচার, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার এজারহারভূক্ত আসামি মানছুরাকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেপ্তার দেখাবে বলে জানিয়েছেন।

অপরদিকে বরিশাল নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাংলাদেশ ব্যাংক সংলগ্ন মহিলা কলেজ গলির ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমানের মালিকানাধীন হাবিব ভবনের দ্বিতীয় তলার আবুল কালামের গোপন আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া আরেক কিশোরী জানিয়েছে, পার্লারে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বাকেরগঞ্জ থেকে বরিশালে এনে তাকেও কালামের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন মানছুরা। টানা দুই সপ্তাহ একটি ফ্ল্যাটে বিভিন্ন লোকের সাথে তাকে শারীরিক সর্ম্পক স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছিলো। এতে রাজি না হলে বিভিন্ন স্টাইলে নির্যাতন চালাতেন কালাম ও তার সহযোগিরা।

উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরীর দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, বরগুনার তালতলী উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড হুলাটানা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম দীর্ঘদিন বরিশালে থেকে কিশোরীদের অপহরণ করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করতেন। একই গ্রামের বকুল মুন্সীর মেয়ে মানছুরা বেগমও কালামের আস্তানায় বিক্রি হয়ে গিয়েছিলো। সেখান থেকে বেড়িয়ে মানছুরা নিজেই কালামের হয়ে কিশোরীদের ফাঁদে ফেলার কাজে নামেন। তারই ধারাবাহিকতায় কমপক্ষে ছয়জন কিশোরীকে এখন পর্যন্ত কালামের আস্তানায় বিক্রি করে মানছুরা।

নির্যাতনের শিকার এক কিশোরীর মা বলেন, পাচারকারী চক্রটিকে ধরিয়ে দেওয়ার পর আমাকে ওয়ার্ড মেম্বার আলমগীর হোসেন বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখাচ্ছেন। থানার এক পুলিশ সদস্য মোবাইলে কল করে এসব সাংবাদিকদের কাছে না বলার জন্য বলেন। ফলে আমি চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, পাচার ও ধর্ষণের শিকার হওয়ার কিশোরী (১৭) চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনার মূলহোতা আবুল কালাম, তার স্ত্রী রাহিমা বেগম, সহযোগী ইব্রাহিম এবং মানছুরার সরাসরি সম্পৃক্ততা পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার, ধর্ষণ এবং পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৮ ফেব্রæয়ারি দিবাগত রাতে নগরীর একটি আস্তানা থেকে পাচার হওয়া দুই কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া আরও পাঁচজনকে আটক করা হয়। যারমধ্যে দুইজন পাচার চক্রের হোতা। বাকিরা ওই আস্তানায় ফূর্তি করতে আসতো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর