সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম নিজের নাম ছাড়া কিছুই লিখতে পারেন না। এসএসসি বানানও জানেন না তিনি। তবুও তিনি এবার এসএসসি পাশ করেছেন। পেয়েছেন জিপিএ-৪.৭১। এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
জানা যায়, উপজেলার মাধাইনগর ইউয়িনের ভাদাস গ্রামের ইউপি সদস্য সাইফুল (বর্তমানে পৌরসভার আওতাধীন) ছোটবেলা থেকেই কৃষি কাজে জড়িত থাকার জন্য লেখাপড়া বা স্কুলে যেতে পারেন নি। কোনমতে তার নাম লিখতে পারলেও কোন ক্লাস বা বই সম্পর্কে তার কোন ধারনা নেই। কিন্ত তিনি চলতি বছরে তাড়াশ জাফর ইকবাল কারিগরী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে জিপিএ-৪.৭১ পেয়ে পাশ করেন। এ নিয়ে চলছে পুরো এলাকা জুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। একজন নিরক্ষর ইউপি সদস্য কিভাবে এসএসসি পাশ করলেন।
উপজেলার ভাদাস গ্রামে মজিবর রহমান বলেন, এটা তো জলন্ত সত্য কথা যে ওই মেম্বর লিখতে পারেন না। সে নির্বাচিত হওয়ার পর কোন রকম তার নাম স্বাক্ষর করা শিখেছেন। তবে কিভাবে সে পরীক্ষায় পাশ করল তাদের জানা নেই।
ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জাফর ইকবাল কারিগরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা বিষয়গুলোর নাম বলতে না পারলেও তার উত্তীর্ণ ফলাফলে বাংলা, অংক, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, পদার্থ, কম্পিউটার এপ্লিকেশন, শারীরিক শিক্ষা স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও ইংরেজি ও রসায়নে এ আত্মকর্মসংস্থান ও ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয়ে এ মাইনাস এবং ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, দাদা ভাই আমি বাংলায় বলবো নাকি ইংলিশে বলবো। এ প্রতিবেদক তাকে বাংলায় বলতে অনুরোধ করলে তিনি বলেন, আমি কোন মতে নাম লিখতে পারি। কিন্তু সামনে মেম্বর হতে এসএসসি পাশ লাগবে শুনে ভর্তি হই। আর কোন বিষয়ে বা কি কি বই তা আমি জানি না। তবে ৪.৭১ পেয়ে পাশ করছি। তা মাস্টাররা জানেন। এদিকে পাশের পর গ্রামে প্রায় ২হাজার বাড়িতে ২টি করে মিষ্টি বিতরণ করেছি।
তাড়াশ জাফর ইকবাল কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের সুপার মো: আব্দুর রাজ্জাক জানান, ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম এবার আমার প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পাশ করেছেন। তবে তিনি নিরক্ষর কিনা জানি না। কিভাবে পাশ করা হয়েছে তা পড়ে বলবো বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফকির জাকির হোসেন বলেন, ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের বিষয়টি আমার জানা নেই।