বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং ও মাদকের উপর সারাদেশে সরকারের চুলছেড়া অভিযানের মধ্যেও সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় বন্ধ হচ্ছে না বাল্যবিয়ে। ইউনিয়ন পরিষদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,কাজি, ইমাম ও অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে চলছে বাল্যবিবাহ এবং প্রেমের টানে ঘর ছাড়ার ঘটনা অভাদে ঘটে চলেছে। উপজেলায় প্রতি বছর যত বিবাহ হয় তার শতকরা ৮৫জন ছেলে মেয়েদের বয়স থাকে ১৮ বছরের নীচে। এসব বাল্য বিয়ের মুলত কারণ হিসেবে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন দারিদ্রতা শিক্ষা আর কিশোর বয়সের প্রেম,ভালবাসা,সামাজিক চাপ,সামাজিক নিরাপত্তা। বিবাহ আইনের বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে কমছে না বাল্য বিয়ে ও ইভটিজিং। চৌহালী উপজেলায় মুলত বাল্য বিবাহ হয়ে থাকে গ্রাম-গঞ্জের পুরনো ধ্যান ধারণা সচেতনতা ও পছন্দের পাত্র পাত্রী হারানো বা সংকটের কারণে।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, এনডিপি, ব্র্রাক নারী উন্নয়ন সংস্থা, মানব মুক্তি সংস্থা সহ বিভিন্ন সংস্থার জরিপ ও পর্যলোচনা সূত্রে জানা গেছে, চৌহালী উপজেলায় ৬৫ ভাগ বাল্যবিয়ে হয়ে থাকে সামাজিক চাপ আর পাত্র-পাত্রীর মতামত ছাড়াই। এমন ঘটনা অহরহ ঘটেই চলেছ্,ে এর মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা অঙ্গনের শিক্ষার্থীরা কোন কিছু বুজে উঠার আগেই অল্প বয়সে তাদের বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়। অপরদিকে সল্প বয়সে বিয়ের কারনে সংসার বুঝতে না পারায় সাংসারিক কলহ দৈহিক দ্বন্ধ অনেক ছোট খাট জিনিসকে বুজতে না পারায় অপাপ্ত বয়সে বিয়ের কারণে সমাজে নারীদের বিষপান ও গলাই দড়ি ইতিহাস অতি পুরনো। এনিয়ে উপজেলার সুসীল সমাজ বলেন বিয়ের উচ্চ হারের সঙ্গে দারিদ্রতার একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যমুনা নদীর চরাঞ্চলসহ উপজেলায় দরিদ্র শ্রেনীর বাল্যবিয়ের হার অনেক বেশ্,ী আমাদের সমাজে বাল্যবিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে এর ব্যাপকতা বৃদ্ধি ও আইনে যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় বাল্যবিবাহ থামছে না। তাছাড়াও দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বড় ধরনের অসংহতি রয়েছে। বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে আদালতে যেতে হয় বলে সবসময় বাল্যবিবাহ রোধ করা সম্বাব হচ্ছে না। সমাজে বহু আগ থেকেই দেখা যায় বৃদ্ধা ও অর্ধবযসী মানুষ বয়স ৪০/৬০ কিন্ত তারা বিয়ে করছেন ১৫/১৭ বছরের মেয়েদেরকে । গত ১বছরে উপজেলায় বাল্যবিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন। গত ২৬আগষ্ট উপজেলায় আর পি এন স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী সাদিয়া আক্তার(১৩) নোটারি পাবলিক এফিডেভিট করে বিয়ের পিড়িতে বসতে গেলে চৌহালী থানা পুলিশের খবর পেলে ঘটনা স্থল থেকে পালিয়ে যায়।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধান এ বিষয়গুলো সভা-সেমিনারে উত্থাপন করে আসছে তবে বন্ধের কোন তেমন লক্ষন নেই বলে তারা জানান। সমাজে প্রেমিক- প্রেমিকা বালবাসার টানে ঘর বা স্কুল ছেড়ে পালাতে গিয়ে ধরা পড়লে গ্রাম্যসালিশের মাধ্যমে কিছু বিয়ের পিড়িতে বসে, আবার বিচ্ছেদ ঘটিয়ে ছেলে পক্ষকে আর্থিক জরিমানা করা হয় যার বাস্তব চিত্র উমারপুরে মানিকের মেয়ে মালেকা (১৪), গ্রাম্য সালিশে তিন লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। কারণ সামাজিক ভাবে বাল্য বিয়ে বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়নি। ফলে প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনী জোরালো উদ্যোগ অব্যাহত রেখে,আইনবিরোধী এ প্রথা বন্ধ করা দরকার বলে মনে করেন সচেতন সমাজ।
আইন শৃংখলা,মাদক,বাল্য বিবাহ, চুরি,ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপরাধ জনিত বিষয় নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে মাসিক সভায় আলোচনা-পর্যালোচনা করা হয়। এনিয়ে প্রত্যেক ইউনিয়ন বা ওয়াড পর্য়ায়ে কমিটি রয়েছে অথচ তারা এবিষয়ে কোন ভুমিকা দেখাতে পারছে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফসানা ইয়াসমিন তার সমায়ে কতটি বাল্য বিয়ে রোধ করেছেন এ বিষয়ে কোন তথ্য নেই। সাবেক ইউ,এনও আনিসুর রহমান ৩৪ টি বাল্য বিয়ে রোধ করেন। এরপর থেকে আর কোন স্কুলছাত্রীকে বাল্যবিয়ের আসর থেকে উদ্ধার করার নজর চোখে পরেনি গণমাধ্যম কর্মীদের।