নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট অনেকটাই কেটে যাচ্ছে। চলতি মাসের শেষের দিকে ৪০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। সহকারী শিক্ষক নিয়োগের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্নাতক পাস ছাড়া কেউই আবেদন করতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বিষয়টি স্বীকার করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক মো. ফসিউলস্নাহ বলেন, প্রাক-প্রাথমিকে ২৬ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে। ১০ হাজার পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য ও সৃষ্ট পদ মিলিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার জন্য গত সপ্তাহে সারা দেশের শূন্য পদের তালিকা চেয়েছি। জুলাই মাসের শেষ দিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে সব কিছু।
২০-২৫ লাখ ছেলেমেয়ে আবেদন করে। সবার বাসায় ইন্টারনেট নেই। তারা আবেদন করতে দোকানে যাবে। তখন সমস্যায় পড়তে পারে। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাক-প্রাথমিকের জন্য আলাদা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে না। তবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা হবে। ডিপিই সূত্র জানায়, প্রাক-প্রাথমিকের নতুন ২৬ হাজার পদ সৃষ্টি হয়েছে। আরও ১০ হাজার পদ শূন্য হয়েছে। আগামী অর্থবছরের জুন পর্যন্ত শূন্য পদের হিসাব করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ হিসাবে ৪০ হাজারের উপরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে দুই বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য নতুন পদ সৃষ্টির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে আরও অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগ হবে। বাংলাদেশ প্রাইমারি এডুকেশন অ্যানুয়াল সেক্টর পারফরম্যান্স ২০১৯-এর তথ্য অনুযায়ী, মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হয় ৭৪৯টি স্কুল, ২ জন শিক্ষক দিয়ে ১ হাজার ১২৪টি, ৩ জন শিক্ষক দিয়ে ৪ হাজার ৮টি। তবে সম্প্রতি ১৮ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ায় সে সংকট অনেকটা কেটে গেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৬৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মুজিববর্ষে সব শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকটা বিঘ্নিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে ২ বছর সময় পার হয়ে যায়। এই সময়ের মধ্যে অবসর, মৃতু্যসহ নানা কারণে আরও অসংখ্য শিক্ষক অবসরে চলে যান। ফলে শিক্ষকের সংকট থেকেই যায়। এ সংকট কাটিয়ে উঠতে দ্রম্নত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার দাবি চাকরিপ্রার্থীদের। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ১২ হাজার পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও সম্প্রতি ১৮ হাজার ১৪৭ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়।