রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৭ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

রাবি ছাত্রলীগের বিতর্কিতরা নতুন কমিটির বিলুপ্তি চায়

রাজশাহী প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩, ৪:০৩ অপরাহ্ণ

দীর্ঘ সাত বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে ভাঙচুর, মারধর ও আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে।ঘোষিত এ কমিটিকে বিতর্কিত আখ্যা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন পদবঞ্চিত নেতারা।বিতর্কিত এ কমিটি বাতিল চান তারা।তবে আন্দোলনকারী নেতাদের বিরুদ্ধেও নানা বিতর্ক রয়েছে।ছাত্রলীগের এমন কর্মকাণ্ডে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিরাপত্তার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ক্যাম্পাসে যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।এছাড়া আমরাও সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করছি।
গত ২১ অক্টোবর রাতে এ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।এতে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে সভাপতি ও আসাদুল্লা-হিল-গালিবকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
ঘোষণার পরদিন এ কমিটি অবাঞ্ছিত ও বিলুপ্তির ঘোষণা করে ক্যাম্পাসে ভাঙচুর, মারধর ও আন্দোলন শুরু করে ছাত্রলীগের একাংশ।
এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সহ-সভাপতি কাজী আমিনুল হক লিংকন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহিনুল সরকার ডন, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম দুর্জয়, ছাত্রলীগ নেতা অনিক মাহমুদ বণি ও সাকিবুল হাসান বাকি প্রমুখ।তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদবঞ্চিত।
উল্লেখ, কাজী আমিনুল হক লিংকন বিবাহিত ও আয়ান নামে ৫ বছরের এক সন্তান আছে তাঁর।
ছাত্রলীগের আরেক নেতা অনিক মাহমুদ বণি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ম বর্ষ পাশ না করার কারণে ড্রপ আউট, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ থেকে ২ বার বহিষ্কৃত, মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেফতারকৃত এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সোহেল হত্যা মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত পলাতক আসামি।
সাকিবুল হাসান বাকি বিবাহিত, মাদকাসক্ত, চাঁদাবাজ ও ইভটিজার হিসেবে পূর্ব থেকেই অভিযুক্ত।বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে গত ৬ বছর একেবারে নিস্ক্রিয় ছিলেন তিনি।
শাহিনুল সরকার ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিকাদারিতে প্রভাব রাখা ও ভর্তি জালিয়াতির অভিযুক্ত।স্থানীয় বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাসে সব সময় বিচরণ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ নেই তাঁর।
তৌহিদ দুর্জয় লালমনিরহাটের দুইটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাশ করে ২০১৫/১৬ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের ডিপার্টমেন্ট খ্যাত ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের ছাত্র হিসেবে শিবিরের সাথে গভীর লিয়াজো আছে।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সেক্রেটারি একজন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, রাবি শিবিরের আরেকজন সদ্য সাবেক সেক্রেটারি তার ঘনিষ্ঠ ছোট ভাই।
লিংকন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্দোলনকারী কোনো নেতাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র নন।পদ পেতে বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি আছেন তারা।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপ আউট।আরেক নেতা সাকিবুল হাসান বাকির বিরুদ্ধে বিবাহ, মারধর ও ইভটিজিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
পদবঞ্চিত নেতা কাজী লিংকনের অভিযোগ, এতদিন যাচাই-বাছাই করে কমিটির নেতৃত্বে বিতর্কিতদের আনা হয়েছে।নিষ্ক্রিয় একজনকে সভাপতি এবং বিবাহিত, ড্রপ আউট ও অনুপ্রবেশকারী একজনকে সাধারণ সম্পাদক পদে বসানো হয়েছে।আমরা এ কমিটি মানি না।এছাড়া কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে নেতৃবৃন্দকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেয়ার ঘোষণা দেন পদবঞ্চিতরা।
এদিকে সদ্য ঘোষিত শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটির অধিকাংশ নেতার বিরুদ্ধে হলে সিট বাণিজ্য, সিট দখল, মারধর, চাঁদাবাজি, তথ্য গোপন করে সান্ধ্যকোর্সে ভর্তিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
সদ্য ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব জানান, কমিটির দাবিতে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে একসঙ্গে আন্দোলন করেছি, তখন তাদের এই অভিযোগ ছিল না।পদ না পেয়ে এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন তারা।
সার্বিক বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com