মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১০ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

আগৈলঝাড়ায় শ্রমিক সংকটে অশনী’র আগে পাকা ধান কাটতে পারছেন না চাষিরা কাল বৈশাখী ও বৃষ্টিতে ফসলের ব্যপক ক্ষতি, ৫৫ভাগ পাকা ধান জমিতে

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি বরিশাল:
আপডেট সময়: বুধবার, ১১ মে, ২০২২, ৩:১১ অপরাহ্ণ

বরিশাল জেলার অন্যতম শষ্য উৎপাদনকারী উপজেলা আগৈলঝাড়ায় জমির পাকা ধান ঘরে তলিতে না পেরে বিপাকে পরেছেন চাষিরা। ঘূর্ণিঝড় ‘অশনী’র প্রভাবে থেমে থেমে মাঝারি ও ভাড়ি বৃস্টি ও শ্রমিক সংকটে পাকা ধান কাটতে না পারা ও রোদের অভাবে কাটা ধান শুকাতে না পেরে চরম দুশ্চিন্তা আর উৎকন্ঠায় দিন যাপন করছেন কৃষকেরা। ধানের স্থানীয় বাজার মূল্যও আগের চেয়ে প্রায় অর্ধেকে নেমে আসায় চাষিদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
ঈদের আগে কিছু ধানকাটা শুরু হলেও বর্তমানে পাকা ধান কাটার ভরা মৌসুম। ঈদের দিন থেকে কাল বৈশাখী ঝড়ের সাথে শুরু হওয়া বৃস্টি ও বর্তমানে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘অশনী’র প্রভাবে থেমে থেমে মাঝারি ও ভাড়ি বৃস্টির কারণে কৃষকের ক্ষেতে হাটু পানি জমে গেছে। অন্যদিকে জমিতে রাখা কাটা ধান কয়েক দিনের বৃস্টিতে ভিজে অঙ্কুরোদগম হয়ে যাচ্ছে। এতে ওই ফসলের ৫০ শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে। অনেক জমির ধান কাল বৈশাখীতে নুয়ে পরার কারণে ধানের মধ্যের শষ্য নস্ট হয়ে গেছে।
কৃষকেরা জানান, বর্তমান বছরে শুরু থেকে আবহাওয়ার আনুকূল্য, পর্যাপ্ত পানি, সার, ঔষধ ঠিক সময়ে পাওয়ায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে ভালো ফলনের পরেও গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, খুলনা, বাগেরহাট, শরণখোলা, মোড়লগঞ্জ, পিরোজপুর জেলা-উপজেলার ধানকাটা শ্রমিকেরা গত বছরের তুলনায় এরাকায় অনেক কম এসেছে। ঈদের পরে ধান কাটার ভরা মৌসুমের এই সময়ে তাদের এরাকায় আসার কথা থাকলেও ঘুর্ণিঝড় অশনীর প্রভাবে থেমে থেমে বৃষ্টি ও শ্রমিক সংকটের কারণে ঘুর্নিঝড় অশনীর আগে ধান কাটতে পারছেন না কৃষকেরা। অনেকে দৈনিক হাজিরার শ্রমিক নিয়েও পাকা ধান কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। শ্রমিক স্বাল্পতার মধ্যে কিছু পাকা ধান কাটা হলেও বৃস্টির কারনে ধানের খর-কুটা পচে যাওয়ায় গবাদী পশুর খাদ্য সংকট দেখা দেবে বলেও জানান চাষিরা।
এদিকে এত কস্টের পরেও চাষিদের ফলানো ধান স্থানীয় বাজারে আগের চেয়ে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বর্তমানে ধানের স্থানীয় বাজার মূল্য সর্বোচ্চ ৭শ টাকা দর দেখা গেছে বিভিন্ন হাট বাজারে। সরকারীভাবে ধান ক্রয় করা শুরু হলেও বৈরী আবহাওয়ার কারনে ভাল করে ধান শুকাতে না পারায় অনেক চাষীরাই ইচ্ছা থাকলেও সরকারী গুদামে তাদের ধান দিতে পারছেন না।
উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র মন্ডল জানান, বুধবার পর্যন্ত উপজেলার ৪৫ভাগ ধান কাটা হলেও বাকী ৫৫ ভাগ পাকা ধান কাটা নিয়ে চাষীদের বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন- মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের তালিকা প্রনয়নের কাজ চলমান রয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্থ চাষীর তালিকা প্রনয়ন ও চূড়ান্ত ক্ষয় ক্ষতির তালিকা করতে পারবেন তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দোলন চন্দ্র রায় জানান, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ৯হাজার ৪শ ৫হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করা হয়। জমি চাষের লক্ষমাত্রার বিপরীতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬৫হাজার মেট্রিক টন ধান। বর্তমানে বৃষ্টির কারণে ও শ্রমিক সংকটের কথাও জানান তিনি।

 

 

#CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর