বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

আটঘরিয়ায় পেঁয়াজ বীজে ব্যাপক লাভের আশা করছেন চাষিরা

মাসুদ রানা, আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:০৩ অপরাহ্ণ

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠ জুড়ে সবুজ ডগায় গোছায় গোছায় সাদা ফুল। ওই সাদা ফুলের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ‘কালো সোনা’ খ্যাত পেঁয়াজ বীজ। কৃষিবিদদের মতে, এ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ গুণে ও মানে উৎকৃষ্ট। ফলনও হয় বেশ ভালো। আর তাই আটঘরিয়ায় পেঁয়াজের বীজ চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা।

আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর উপজেলায় ৪হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ হয়েছে। বছর জুড়েই পেঁয়াজের দাম বেশি। তাই অল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় এবার লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও বেশি পেঁয়াজের বীজ আবাদ হয়েছে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উপজেলায় বেশি পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ১ মণ বা ৪০ কেজি বীজের দাম ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। সময় ভেদে চাহিদার তুলনায় দাম আরও বেশি হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখানকার পেঁয়াজ বীজের বেশ চাহিদা রয়েছে। আর তাই এখানকার বীজ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন উপজেলার কৃষকরা।

ভালো লাভের সম্ভাবনার বিষয়ে উপজেলার পেঁয়াজ বীজ চাষিরা জানায়, আটঘরিয়ায় খুব উর্বব হওয়ায় পেঁয়াজ বীজ চাষে রয়েছে অফুরন্ত সম্ভাবনা। উপজেলার মধ্যে দেবোত্তর ইউনিয়ন, একদন্ত ইউনিয়নে, লক্ষীপুর ইউনিয়নে, চাঁদভা ইউনিয়নে,মাজপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পেঁয়াজ বীজের চাষ হয়েছে। পেঁয়াজ বীজের সাদা ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে উপজেলার খেতগুলো। শেষ সময়ে এসে চাষিরাও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঝড়, শীলা বৃষ্টি না হলে এবার পেঁয়াজ বীজের আশাতীত ফলন হবে।

জানা গেছে, এ বছর চাষাবাদ যোগ্য জমির বেশির ভাগ জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করা হয়েছে। উপজেলার একদন্ত ও লক্ষীপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ ও পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়ে থাকে।

উপজেলায় মূলত দুই জাতের বীজ চাষ হয় তাহেরপরী, বারী পেয়াজ-১। তবে তাহেরপরী জাতের চাষ বেশি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বিরূপ আবহাওয়া বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় মাঠে মাঠে পেঁয়াজ গাছে ফুলের অবস্থা খুবই ভালো। চাষিরা কয়েক সপ্তাহ পরেই মাঠ থেকে পুরোপুরি পেঁয়াজ বীজ সংগ্রহ শুরু করবেন। বাজার দর স্বাভাবিক থাকলে প্রতি মণ বীজ বিক্রি হবে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। এসব পেঁয়াজ বীজ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মহাজন ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে মণ বা কেজি দরে কিনে নিয়ে যান।

পয়াজের কদম ফুল চাষিরা জানান, ‘পেঁয়াজের দানা উৎপাদন অতি লাভজনক হলেও ঝুঁকিও রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন ভালো, আর বিরূপ হলেই মাথায় হাত পড়ে।’উৎপাদিত এ বীজে নিজেই পেঁয়াজ রোপণ করবো বাকিটা বাইরে বিক্রি করে দিবো।’

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব আল মারুফ বলেন, ‘উপজেলায় পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনে কৃষকদের নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ। লাভজনক হওয়ায় দিনদিন পেঁয়াজ বীজের চাষ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে আটঘরিয়া উপজেলায়। এতে এলাকার লোক বেশ লাভবানও হচ্ছেন।’

পেঁয়াজ বীজ চাষের কৃষকদের পরামর্শস্বরূপ এই কর্মকর্তা বলেন, ‘পেঁয়াজ বীজে কৃষকরা যেন কীটনাশক প্রয়োগ না করে। কীটনাশক প্রয়োগ করলে মৌমাছি বসে না। আর মৌমাছি না বসলে পরাগায়ন হবে না। তাই পেঁয়াজ বীজ চাষে খুব সর্তকভাবে কীটনাশকের প্রয়োগ করতে হবে। হস্তপরাগায়নের পরামর্শে কৃষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ ফুলে হাতের তালু দিয়ে আলতোভাবে চাপ দিলে পরাগায়নের সৃষ্টি হয়। ফলে উৎপাদন বেশি হবে।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর