বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

চলনবিলে সরিষা আবাদের ধুম পরেছে  কৃষকদের

মোঃ মুন্না হুসাইন, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনি:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

দেশের ঐতিহ্যবাহি চলনবিলের বিস্তীর্ণ এলাকায় কালের বিবর্তনে কৃষি বিপ্লব ঘটেছে। এক সময় বিলের হাজার হাজার হেক্টর নিচু জমি ইরি-বোরো ধানের আবাদ শেষে প্রায় দুই মাস পতিত পড়ে থাকতো। বর্তমানে অধিকাংশ কৃষক জমি পতিত না রেখে বাড়তি ফসল হিসেবে উচ্চ ফলনশীল সরিষার চাষ করছেন। আবাদও হচ্ছে ভাল। ফলে সরিষা চাষ করে উদ্বৃত্ত অর্থ উপার্জন করায় বোরো চাষের খরচ উঠেও উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে কৃষকদের। বিলের বিপুল পরিমান জমিতে সরিষার ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এলাকায় ভোজ্য তেলের আমদানী নির্ভরতাও কমেছে। চলতি মৌসুমে চলনবিল সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে একাকার হয়ে গেছে।

সরজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর উপজেলা এবং সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, শাহজাদপুর, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুরসহ বৃহত্তর চলনবিল এলাকায় প্রায় ৫৯ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে। সরিষা খেত গুলো হলুদ ফুলে ফুলে একাকার হয়ে গেছে। বিল এলাকার কৃষকদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বিনা মূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করেছে সরকার।

কৃষকরা আশা করছেন, এবার বাম্পার ফলন হবে। পোকা মাকড়ের আক্রমন রোধে কৃষকদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকা গুলোর কৃষি অফিসের কর্মকর্তারাও সজাগ থাকায় অতি দ্রুত তা রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলার মহেশরৌহালী গ্রামের মোঃ সোরহাব শেখ জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। বিঘা প্রতি প্রায় ৭ মন হারে ফলন পাওয়া যায়। এবার মৌসুমের শুরুতেই সরিষার খেতে পোকার আক্রমন দিয়ে ছিল। তবে তা রোধ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো জানান, এ এলাকার কেউ জমি চাষ করে সরিষা বপন করেন আবার কেউ কেউ বিনা চাষে পতিত জমিতে বীজ ছিটিয়ে সরিষা আবাদ করেন।

তাড়াশ এলাকার কাদের জানান, গত বছর দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে তিনি প্রায় ৩৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন। সিরাজগঞ্জের তাড়াশের দক্ষিণ শামপুর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, বিল থেকে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষকেরা সে জমিতে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বিঘা প্রতি প্রায় ৭ মন হারে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। পনেরো-বিশ বছর যাবত এভাবে সরিষা চাষ করে কৃষক উপকৃত হচ্ছেন। মহেশরৌহালী গ্রামের কৃষক মফিজ ইসলাম জানান, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে ৩ হাজার টাকা খরচ হয় এবং প্রায় ১৫ হাজার টাকা লাভ থাকে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা জানান, বৃহত্তর চলনবিল এলাকায় প্রায় ৫৯ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল সরিষা চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে চলতি মৌসুমে কেবল তাড়াশে ৫৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন পাওয়া যায় ১.২ (এক দশমিক দুই) টন। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া সরিষা চাষের অনুকূলে আছে। আশা করা যাচ্ছে ভাল ফলন পাওয়া যাবে।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর