সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

আটঘরিয়ায় এখন হগল রাস্তা ভাঙ্গাচোরা

মাসুদ রানা, আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৯:৩০ অপরাহ্ণ

কথা হয় ব্যাটারি চালিত চার্জার ভ্যান চালক শাফাজ উদ্দিন, মজনু মিয়ার সাথে তারা বলেন, আমাগো উপজেলার হগল রাস্তাই এখন ভাঙ্গাচোরা, যাত্রী ভাইয়েরা আমাগো ভ্যানে উঠতে চাই না, হেঁটে হেঁটে বাড়ী যেতে চায়, এই ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় ভ্যান চালাতে গিয়ে দুই-এক দিন পর পরই নাটবল্টু নড়বড়ে হয়ে যায়। অনেক সময় নাটবল্টু খুলে পড়ে যায়। ফলে সারাদিন ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় শক্তি ¶য় করে যে রোজগার করি, তার একটা অংশ ভ্যান মেরামত করতেই শেষ হয়ে যায়।

শস্যভান্ডার হিসাবে খ্যাত এখন পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা। এই উপজেলা বর্তমানে এক অবহেলিত জনপদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাঘাট সংস্কার না করায় উপজেলার অধিকাংশ রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। পিচ-খোয়া উঠে প্রধান প্রধান স্থানে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। সৃষ্টি হওয়া ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে যানবাহন চলছে এঁকেবেঁকে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। পথচারী ও গাড়ির যাত্রীদের দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে। এছাড়াও, ভালো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছরের পর বছর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সড়কের অধিকাংশ রাস্তাঘাট এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে। স্থানীয়দের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করলেও রাস্তাাগুলো সংস্কারে তেমন কোন উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদরের দেবোত্তর হতে একদন্ত সড়ক, একদন্ত হয়ে জোরগাছ ব্রীজ পর্যন্ত, পাঞ্জাবনগর হতে হিদাসকোল মসলেম মোড় পর্যন্ত, দেবোত্তর হতে খিদিরপুর বাজার পর্যন্ত, পারখিদিপুর বাজার হতে দরবেশপুর বাজার, একই অবস্থা চাঁদভা বেতীপাড়া মোড় হতে লক্ষণপুর-ভরতপুর মাদরাসা পর্যস্ত সড়কের বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।

এসকল সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কয়েক বছর ধরে এ সড়কে চলাচলে দূর্ভোগে পরেছে সাধারন মানুষ। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে কাঁদা-পানি একাকার হয়ে রয়েছে। খানাখন্দে পানি জমে থাকায় যানবাহন চলাচলের সময় পানি ছিটকে উঠছে। এতে বেশ কয়েকজন পথচারীর কাপড় নোংরা হতে দেখা গেছে। শুকনো মৌসুমে তেমন কোন সমস্যা না হলেও বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।

এসব সড়কে প্রতিদিন অসংখ্য বাস, ট্রাক, মাইক্রো, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ভ্যান ও রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনে কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীসহ ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এসব সড়ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে চলতে গিয়ে পথচারীদের যেমন সময়ের অপচয় হচ্ছে ঠিক তেমনই রয়েছে জীবনের ঝুঁকি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ ও দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় রাস্তাগুলোর এ অবস্থা। পায়ে হেঁটে চলাচলেরও অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এলাকার বাসিন্দা কামরুজআজামান, শফিউল্লাহ, নজরুল ইসলাম, সোহেল রানা, জাহাঙ্গীর আলমসহ আরও অনেকেই বলেন, এসব রাস্তাা দেখে মনে হয় যে এখনও আমরা আদিযুগে বসবাস করছি। যে যুগে রাস্তাা-ঘাট ও যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নত ছিল না। কিন্তু একটি দেশের রাস্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ছাড়া সামগ্রিক উন্নয়ন কোন ভাবেই সম্ভব নয়।

তারা আরও বলেন, এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা হিন্দু অধ্যুষিত। আসন্ন দূর্গা পূজায় এসব রাস্তা দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করবে। কিন্তু রাস্তার যে বেহাল অবস্থা তাতে দুর্ভোগ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর