প্রতারক চক্রের খপ্পরে শিশুদের উপবৃত্তির টাকা খোয়ালো পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অনেক অভিভাবক। প্রতারক মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমের প্রযুক্তির অপব্যবহার করে গত দু’দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ পর্যন্ত উপজেলার গজারমারা, মেন্দা খালপাট ও বোয়ালমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অন্তত অর্ধশতাধিক অভিভাবকের মোবাইল একাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার খবর পাওয়া গেছে।প্রতারণার শিকার কয়েকজন অভিভাবক সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সেলিম রেজা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় ভাঙ্গুড়া উপজেলায় গত তিন দিন আগে ১২ হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির ৪৫০ টাকা করে অভিবাবকদের মোবাইলে পাঠানো হয়। টাকা পাঠানোর পরে মোবাইল ব্যাংকিং নগদ কর্তৃপক্ষ অভিবাবকদের মেসেজ পাঠায়। এরপর ফোন করে প্রত্যেক অভিভাবকদের মোবাইল নাম্বারে নগদ একাউন্ট চালু করতে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) সেট করতে বলা হয়। একাউন্ট চালু হলে অভিভাবকরা টাকা তুলতে পারে। কিন্তু টাকা মোবাইলে পৌছানোর পর থেকেই প্রতারক চক্র উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক পরিচয় দিয়ে টাকা কম দেয়া হয়েছে বলে জানায়। এসময় বেশি টাকা পাঠানো হবে বলে নগদের ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড চাইলে অনেক অভিভাবক তা প্রতারকদের দিয়ে দেয়। এরপর অভিভাবকদের মোবাইল একাউন্ট থেকে টাকা কেটে যায়। মেন্দা খালপাট গ্রামের অভিভাবক মমতাজ খাতুন বলেন, ফোন করে শিক্ষকের কথা বলে মেসেজে আসা নাম্বারটা চাইলে দিয়ে দেই। পরে মোবাইল নিয়ে দোকানে টাকা তুলতে গেলে দেখি টাকা নাই।
মেন্দা খালপাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান টগর বলেন, প্রতারকরা কৌশলে অভিভাবকদের ফোন দিয়ে টিন নাম্বার নিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে। এ পর্যন্ত আমার বিদ্যালয়ের ৯ জন অভিভাবক প্রতারণার শিকার হয়েছে বলে জেনেছি। তবে সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সেলিম রেজা বলেন, প্রতারকরা ভুয়া শিক্ষক ও কর্মকর্তা সেজে ফোন দিয়ে ওটিপি নাম্বার নিয়ে নগদ একাউন্ট থেকে উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অভিভাবক ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতারণার বিষয়টি জানিয়েছেন। এরপর এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন দপ্তরকে আমরা জানিয়েছি এবং প্রতারকদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অভিভাবকদের সচেতন করতে এরই মধ্যে প্রচারণা শুরু করেছি।
CBALO/আপন ইসলাম