শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন

ই-পেপার

জামালপুরের বকশীগন্জে একমাত্র আদিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবেন্দ্র সাংমা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: রবিবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

কামরুজ্জামান কানু,জামালপুর:
জামালপুর জেলার একমাত্র আদিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবেন্দ্র সাংমাকে (৭৩) ১৫ জানুয়ারি বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়েছে। ১৪ জানুয়ারি রাতে জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের দিঘলাকোনা গ্রামে নিজ বাড়িতে পরলোকগমন করেন তিনি। পাকস্থলীতে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি।

পারিবারিক সূত্র জানায়, বেলা ১১টায় প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা এবেন্দ্র সাংমার কফিনে জাতীয় পতাকা মুড়িয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদর্শন করেন নির্বাহী হাকিম বকশীগঞ্জের ইউএনও মুন মুন জাহান লিজা ও বকশীগঞ্জ থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম ও মজিবর রহমানসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পরে খ্রিস্টান ধর্মীয় রীতি অনুসারে পারিবারিক সমাধিস্থলে তাকে সমাহিত করা হয়।প্রসঙ্গত, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবেন্দ্র সাংমা তাঁর সহধর্মিনী মিলন দাংগো ও একমাত্র ছেলে বকশীগঞ্জের সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জয় দাংগোসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। দরিদ্র হলেও তিনি ছিলেন পরোপকারী ও সাদামনের মানুষ। তাঁর মৃত্যুতে গারো আদিবাসীসহ পাহাড়ি বাঙালি পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।

মুক্তিযোদ্ধা এবেন্দ্র সাংমা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। জামালপুর জেলায় তিনিই ছিলেন একমাত্র আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই মাত্র ১৯ বছর বয়সে ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে টানা নয়মাস যুদ্ধের রণাঙ্গণে সক্রিয় ছিলেন তিনি। তিনি প্রথমে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায় এবং পরে জামালপুরের ঐতিহাসিক কামালপুরে পাকহানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশের জন্য অবদান রাখেন। সামান্য কিছু জমি চাষাবাদ ও মুক্তিযোদ্ধাভাতায় তাদের সংসার চালানোই দায় ছিল। দীর্ঘদিন ধরে পেটের ব্যথায় ভুগছিলেন তিনি। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কিছুদিন চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবর মাসে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার পাকস্থলিতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। কিন্তু দারিদ্রতার কারণে উন্নত চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরতে হল বীর এই মুক্তিযোদ্ধাকে।

 

CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর