ভারতের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার সঙ্গী নেতা-মন্ত্রীরা গত দুই বছরে নানা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম বারবার টেনে এনেছেন। এবার সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ভারতের জাতীয় সঙ্গীতেরই পরিবর্তন চেয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে দ্রুত সাড়া পেয়ে রীতি মতো উৎফুল্ল বিজেপির সাংসদ তথা অন্যতম নেতা সুব্রামোনিয়ান স্বামী।
এক টুইট বার্তায় এ কথা লিখেছেন তিনি। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন করে বিতর্ক। এমনিতেও রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন লেখা নিয়ে সঙ্ঘের বিভিন্ন মহলে নানা সময়ে আপত্তির কথা শোনা গেছে।
এমনকি মোদি ক্ষমতায় আসার পরে সঙ্ঘের শিক্ষা বিভাগের নেতা দীননাথ বাত্রা এনসিইআরটি-র পাঠ্যক্রম থেকে রবীন্দ্রনাথের লেখা বাদ দেওয়ার সুপারিশও করেছেন।
নরেন্দ্র মোদি অবশ্য পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে গত দু’বছরে নানা সময় রবীন্দ্রনাথের নানা কবিতা আবৃত্তি করেছেন। তার দলের অন্য নেতারাও পশ্চিমবঙ্গে এলে রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করতে ছাড়েন না। এই অবস্থায় সুব্রামোনিয়ান স্বামীর টুইট নতুন বিতর্ক উসকে দিল।
ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ‘জন গণ মন’ নিয়ে সুব্রামোনিয়ান স্বামীর আপত্তি কেন? প্রবীণ এই বিজেপি সাংসদের দাবি, শুধু তার নয়, ‘ভারতের যুব সমাজের বড় অংশের মনের কথা’ বলছেন তিনি।
তার আপত্তির অন্যতম শব্দ হলো জাতীয় সঙ্গীতে ‘সিন্ধু’ শব্দটির ব্যবহার। স্বামীর মতে, বর্তমান জাতীয় সঙ্গীতের কিছু কিছু শব্দ (সিন্ধু) অনাবশ্যক ধন্দ তৈরি করে। বিশেষ করে স্বাধীনতা-পরবর্তী পরিপ্রেক্ষিতে।
রবীন্দ্রনাথের ‘জন গণ মন’-র শব্দ বদলে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ)-র গাওয়া ‘জন গণ মন’র আদলে লেখা অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় সঙ্গীত ‘কাওয়ামি তারানা’র প্রথম পংক্তি ‘শুভ সুখ চ্যান’ গানটি ব্যবহারের কথা বলেছেন তিনি।
এদিকে যে ‘সিন্ধু’ শব্দটি নিয়ে স্বামীর আপত্তি, আইএনএ-র গাওয়া গানে তো তার উল্লেখ রয়েছে। তা ছাড়া, ‘সিন্ধু’ শব্দটি বাদ দিলে আরএসএসের অখণ্ড ভারতের তত্ত্বই যে প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়, সে কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন অনেকে।
সুব্রামোনিয়ান স্বামীর প্রত্যাশা, আগামী বছর ২৩ জানুয়ারির মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করবে নরেন্দ্র মোদি সরকার। কিন্তু আগামী বছরই যে পশ্চিমবঙ্গের ভোট! তার আগে রবীন্দ্রনাথের লেখা ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বদলের ঝুঁকি নেবে সেখানে জিততে মরিয়া বিজেপি? সে প্রশ্ন তো থাকছেই।
সূত্র: আনন্দবাজার