মোঃ কামাল হোসেন অভয়নগর যশোর থেকে:
বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন ।আর নানা রোগ বাসা বেঁধেছে তার জরাজীর্ণ শরীরে। মেরুদন্ডের সমস্যায় কুঁজো হয়ে গেছেন । লাঠির উপর ভর করে একপা দুইপা করে হাঁটেন। পরিনত বয়সে তিনি ক্ষেত শ্রমিকের কাজ করে জীবনীপাত করতেন। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে নানা রোগ শোকে বুনা সোনালী স্বপ্নগুলোর অপমৃত্যু হয়েছে। তার বৃদ্ধা স্ত্রী তার ন্যায় অসুস্থ্য।ওই জীর্ণশীর্ণ পরিবারের দেখার কোথাও কেউ যে নেই । একমাত্র কন্যা আকলিমা শ্বশুরবাড়ি চলে যাওয়ার পর আলোচিত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা চরম অসহায় হয়ে পড়েন। জঠর জ্বালা নিবারণে সে শোনে না কোন কাতর অনুরোধ । আর তাই বাধ্য হয়ে খাবারের অন্বেষণে বের হতে হয় । হাত পাতা কষ্টের তবুও দুইটা টাকার জন্যে চাইতে হয় ।
এ চাওয়া আর কতদিন কতকাল? এ প্রশ্ন তাকে কুরে কুরে খায় ।নির্ঘুম কাটে তার রাতের পর রাত। যশোর অভয়নগরের ভৈরব পূর্বাঞ্চলের নির্জন পল্লী কোদলা গ্রামে তিনি ভাঙ্গাচোরা ঘরে বসবাস করছেন । শ্রীধর পুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার দেরিতে হলেও তাকে একটি বয়স্ক ভাতা করে দিয়েছেন । এই দ্রব্য মূল্য চরা বাজারের অন্ন,বস্ত্র, চিকিৎসা খরচে সে অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। হাঁটাচলা কষ্টসাধ্য তবু তাকে বাহিরে বের হতে হয় । শিল্প বাণিজ্য ও বাণিজ্য বন্দর নগরী নওয়াপাড়া বউবাজারে বৃষ্টিতে ভিজে নাকাল অবস্থা দেখে বিডি প্রভাত প্রতিবেদক পিতৃতুল্য মোহাম্মদ বক্কার গাজী কে পাজা করে পাশে বসিয়ে তার সম্পর্কে জানতে চান।
এ সময় তিনি অন্তর কষ্টের পানি ঝরিয়ে গুমড়ে কেঁদে ওঠেন। বলেন জীবনের গল্প। তার আহাজারিতে নিজের চোখের পানি ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।তিনি যখন চলতে পারবেন না তখন কে তাদের দেখভাল করবেন? এ ধরনীতে আছেন অনেক বিত্ত ঐশ্বয্যের মালিক । তাদের দানের হাত বাড়িয়ে দিলে আবু বক্করা একটু শান্তি স্বস্তিতে পরপারে যেতে পারবেন। এই দানে রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। দাতা নিঃস্ব যে হয়েছেন এমন প্রমাণ নেই বরং দান বয়ে আনে দশগুণ। চরম অধিকার বঞ্চিত চলন হীনদের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ রয়েছে পরমের। জীবনের জন্যই তো জীবন । আমাদের একটু সহানুভূতিতে অসহায় মানুষগুলোর জীবন রক্ষা পেতে পারে । মজলুম নির্যাতিত নিপীড়িত অধিকার বঞ্চিতদের আল্লাহর মধ্যে থাকে না কোন দেয়াল । তাই তাদের আশীর্বাদ সংকটের দিনে ছায়া দেবে । সব প্রাণে পড়ন্ত বিকাল বার্ধক্য আসবেই।