বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:০৫ অপরাহ্ন

ই-পেপার

চাটমোহরে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলায় ঘর ছাড়া তিনটি পরিবার

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ১৮ জুন, ২০২৪, ২:৫১ অপরাহ্ণ

পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল পাকপাড়া গ্রামের ৩টি পরিবার মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে রয়েছেন ঘর ছাড়া। চাটমোহর থানায় শুক্রবার (১৪ জুন) তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে অপহরণ মামলা। মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হান্ডিয়াল পাকপাড়া গ্রামের মৃত: মছির উদ্দিন ফকিরের ছেলে মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার, তার ছোট ভাই মো: রাশিদুল ইসলাম মাস্টার (মানিক ফকির) ও তাদের ভাগ্নে মো: রফিকুল ইসলাম রনি মাস্টার।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা জানতে পারি গত বুধবার (৫ জুন) পাকপাড়া গ্রামের কিশোর লাল চৌধুরীর মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে কিশোর লাল চৌধুরী শুক্রবার (৭ জুন) হান্ডিয়াল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে একরি হারানো জিডি করেন। জিডি মুলে কিশোর লালের মেয়েকে উদ্ধার করে শনিবার (৮ জুন ) এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে মেয়ের পিতা ও মাতার নিকট জমাদেন হান্ডিয়াল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মো: সিরাজুল ইসলাম। (পরিবারের নিকট জমা দানের ভিডিও ফুটেজ এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে)। সেদিন মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ ও আপত্তি নেই মর্মে জবানবন্দি দেন মেয়ের বাবা ও মা।

ভুক্তভোগীদের দাবি, সোমবার (১০ জুন) কিশোর লাল চৌধুরী ও তার কয়েকজন সহযোগী আমাদের ৩ পরিবারের নিকট থেকে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং টকা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও শিশু নির্যাতন মামলা দেয়া হবে মর্মে ভয় ভীতি দেখায়। এ ভাবে কয়েকদিন চাঁদা দাবি করে তালবাহানা করে। ওই পরিবারের পক্ষ থেকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে শুক্রবার (১৪ জুন) রাতে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে অপহরণ, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়ের করেন কিশোর লাল।

অনুসন্ধানে ও একটি ভিড়িও ফুটেজ থেকে দেখা যায়, কিশোর লাল চৌধুরীর মেয়ে হান্ডিয়াল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সিরাজুলের নিকট জবানবন্দি দেন। সেখানে ওই মেয়ে তার জবানবন্দীতে বলেন, পাকপাড়া গ্রামের সুলতান মাহমুদের ছেলে দুই সন্তানের জনক শফিকুল ইসলামের সাথে তার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। এই প্রেমের সম্পর্কে আমার পিতা ও মাতা জানতেন। তিনি আরোও বলেন, আমার পিতার সহযোগীতায় আমি গত ২২ মে সিরাজগঞ্জ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করি। ধর্ম পরিবর্তনের কয়েকদিন পর গোপনে ২৬ মে আমি ও শফিকুল সিরাজগঞ্জ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। তারপর আমরা দুজনে গোপনে বুধবার (৫ জুন) ঢাকায় চলে যাই। (উক্ত জবানবন্দীর ভিড়িও ফুটেজ পুলিশ ও এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে)।

সরজমিনে ও প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কিশোর লাল চৌধুরীর মেয়ের সাথে শফিকুলের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এরই ধারাবাহিকতায় তারা দুজন পালিয়ে বিয়ে করেছে। তাকে কেউ অপহরণ করেনি। সে নিজের ইচ্ছায় শফিকুলের হাত ধরে পালিয়েছিল। মেয়েটা ফিরে আসার পরে তা নিজে স্বীকারও করেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য বৈঠক বসে। বৈঠকে মোটা টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু তাতে শফিকুলের স্বজনরা আপত্তি করলে মীমাংসা বৈঠক ভেস্তে যায়। অবশেষে গত ১৪ জুন রাতে ওই কিশোরীর পিতা চাটমোহর থানায় মামলা করেন।

এ বিষয়ে শফিকুলের মামা আব্দুল কুদ্দুস ও ভাই রফিকুল ইসলাম রনি বলেন, শফিকুল একজন বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক। সে তার মতো পৃথক সংসার করছে। তাদের প্রেম ভালবাসা ও ধর্ম পরিবর্তন সহ বিবাহ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানিনা। তার সাথে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ভালো নেই। উক্ত ঘটনার দিন আমরা নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলাম।

এ বিষয়ে চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: সেলিম রেজার বলেন, অপহরণের পর মেয়েটিকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। এ বিষয়ে ওই মেয়ের পিতা শুক্রবার চাটমোহর থানায় ৪ জনকে বিবাদী করে মামলা করেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর