পাবনার ঈশ্বরদীতে মো.সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাবু (৪৫) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৭ বছরের শিশু কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার ২৯ মে বেলা আনুমানি সাড়ে ১২ টার দিকে ঈশ্বরদীর ছলিমপুর ইউনিয়নের চরমিরকামারী শাকরিগাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাবু (৪৫) উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের চরমিরকামারী শাকরিগাড়ী গ্রামের মৃত মনসুর আলী মোল্লার ছেলে। ভুক্তভোগীর মায়ের দেয়া তথ্য মতে জানা যায়, ভুক্তভোগী কন্যার মা একজন কর্মজীবি মহিলা। তিনি বাড়িতে না থাকায় সুযোগে অভিযুক্ত মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাবু (৪৫) মোটরসাইকেলে চড়ে বেড়ানোর লোভ দেখিয়ে শাকরিগারী গ্রামের স্যান্ডেল ফ্যাক্টরির ভিতরে নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক ভাবে ধর্ষণ করে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাবু মাঝে মধ্যেই ভুক্তভোগী যে বাড়িতে ভাড়া থাকে সেই বাড়ির অন্যান্য ভাড়াটিয়ার প্রায় ৫-৬ জন বাচ্চাদের মোটরসাইকেলে চড়িয়ে ঘুরান। পরে সব বাচ্চাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে ভুক্তভোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় নির্জন জায়গায়। সেখানে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হন। কিছুক্ষণ পরে ভুক্তভোগী কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে আসে। তখন মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লার বড় ভাইয়ের স্ত্রী ভুক্তভোগী শিশু কন্যার কান্নার কারণ জানতে গিয়ে বুঝতে পারেন মেয়েটির সঙ্গে ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। পরে সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর মা ফিরে আসলে ভুক্তভোগী শিশু কন্যার থেকে ঘটনা জানতে পারেন। তখন সে বাড়ীওয়ালা সিরাজুল ইসলাম মোল্লার বড় ভাই আসাদুলের নিকট এ বিষয়ে অভিযোগ দেন। তখন আসাদুল ও তার স্ত্রী ভুক্তভোগীর মাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ঐ রাতেই বাড়ী থেকে বের করে দেন। তখন ভুক্তভোগীর মা বাধ্য হয়ে ঐ রাতেই শিশু কন্যাকে নিয়ে ঈশ্বরদী ইপিজেড গেট এলাকায় নতুন বাসা ভাড়া নেন। বাসা ঠিক হলে মেয়েকে ঐ বাসায় রেখে পুরাতন বাসা থেকে মালামাল নিতে যান। মায়ের আসতে দেরি হওয়ায় মেয়েটি বাসা থেকে বের হয়ে ইপিজেড গেটের সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। পরে স্থানীয়রা মেয়েটিকে রূপপুর পুলিশ ফাড়িতে দিয়ে আসেন। তখন রূপপুর পুলিশ সদস্যরা মেয়েটির থেকে শাকরিগাড়ী বাসার ঠিকানা জানতে পেরে আসাদুলের স্ত্রীর কাছে দিয়ে আসেন। কারণ সে সময় ভুক্তভোগীর মা মালামাল নিয়ে নতুন বাসায় চলে আসেন।
এবিষয়ে আসাদুলের স্ত্রী জানান, রূপপুর ফাঁড়ির পুলিশ মেয়েটিকে নিয়ে আমাদের বাড়ীতে এসে জিজ্ঞাসা করেন বাচ্চাটিকে চিনেন নাকি। তখন মেয়েটি দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে। তখন পুলিশ মেয়েটিকে আমার জিম্মায় রেখে চলে যায়। ধর্ষণের বিষয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। বাড়িওয়ালা আসাদুলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তার ভাই সিরাজুল কর্তৃক ধর্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি। আপনি ঘটনাটিকে একটু বেশি পেচাচ্ছেন বলে ফোন কেটে দেন। স্থানীয় দোকানদার বলেন, আসাদুলের জুতার কারখানার শ্রমিক জাকিরের কাছ থেকে আমি শুনেছি ঘটনার দিন জাকির ধর্ষণের ঘটনা দেখেছে। জাকির বলে ভয়ে আমি কাউকে কিছু বলতে পারিনি। আপনিও কাউকে কিছু বলবেন না। যদি জানতে পারে আমি এই কথা বলেছি তাহলে আমার খবর আছে। ঘটনার পরের দিন থেকে আমরা সিরাজুল ইসলাম মোল্লাকে এলাকায় দেখছি না। এবিষয়ে জাকিরের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে জাকিরকে কারখানায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।