সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

বিলুপ্তির পথে ভাঙ্গুড়ায় বাবুইপাখির বাসা

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: সোমবার, ৩ আগস্ট, ২০২০, ৪:৫৫ অপরাহ্ণ

চলনবিলের আলো বার্তাকক্ষ:

দেশের নানাবিধ সৌন্দর্যের লীলাভূমি রয়েছে পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলা।কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে তালের পাতায় ও নারিকেলের পাতায় মোড়ানো নিপুণ কারুকার্য খচিত বাবুই পাখির বাসা।পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে বাবুই পাখির বাসা প্রায় বিলীন হতে চলেছে।ঘন বসতি বাড়ায় এবং অপরিকল্পিতভাবে গাছ পালা কেটে ফেলা বিশেষ করে তাল গাছ কাটার ফলে কমে আসছে বাবুই পাখির বসবাস।এতে বিপন্ন হচ্ছে এই শিল্পি পাখি বাবুই। আজ থেকে প্রায় ২০-২২ বছর আগেও গ্রাম -গঞ্জের মাঠ-ঘাটের তাল গাছে দেখা যেত এদের বাসা। বাবুই পাখির বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই নয়, মানুষকে স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করতো।তাইতো ছোট্ট বেলায় মুখস্থ পড়া সেই কবিতাটি কবি রজনী কান্ত সেনের ভাষায়,বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই।আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকার পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি-ঝড়ে।

 

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা,খানমরিচ ইউনিয়নসহ প্রায় সবগুলো ইউনিয়নে এখন আর আগের মতো চোখে পড়ে না বাবুই পাখি ও তার তৈরি দৃষ্টিনন্দন ছোট্ট বাসা তৈরির নৈসর্গিক দৃশ্য। বাবুই পাখির নিখুঁত বুননে এ বাসা টেনেও ছেঁড়া কষ্টকর।প্রতিটি তালগাছে ৫০ থেকে ১০০টি বাসা তৈরি করতে সময় লাগে ১০-১২ দিন।খড়, কুটা, তালপাতা, ঝাউ ও কাশবন ও লতা-পাতা দিয়ে বাবুই পাখি উঁচু তালগাছে বাসা বাঁধে। সেই বাসা দেখতে যেমন আকর্ষণীয়,তেমনি অনেক মজবুত।প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা ভেঙে পড়ে না। পুরুষ বাবুই পাখি বাসা তৈরির পর সঙ্গী খুঁজতে যায় অন্য বাসায়। সঙ্গী পছন্দ হলে স্ত্রী বাবুইকে সাথী বানানোর জন্য পুরুষ বাবুই নিজেকে আকর্ষণীয় করতে খাল, বিল ও ডোবার পানিতে গোসল করে গাছের ডালে ডালে নেচে বেড়ায়।চমৎকার বাসা বুনে বাস করায় এ পাখির পরিচিতি বিশ্বজোড়া।

 

বাবুই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো-রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করতে জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় রাখে এবং সকাল হলে ছেড়ে দেয়।প্রজনন সময় ছাড়া অন্য সময় পুরুষ ও স্ত্রী বাবুই পাখির গায়ে পিঠে তামাটে কালো বর্ণের দাগ হয়।নিচের দিকে কোন দাগ থাকে না।ঠোঁট পুরো মোসাকার ও লেজ চৌকা। তবে প্রজনন ঋতুতে পুরুষ পাখির রং হয় গাঢ় বাদামি। অন্য সময় পুরুষ ও স্ত্রী বাবুই পাখির পিঠের পালকের মতই বাদামি হয়। উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের ঝবঝবিয়া গ্রামের অনেকে বলেন, আমাদের গ্রামে ছোটবেলায় দেখতাম রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তাল গাছগুলোর মধ্যে অনেক বাবুই পাখির বাসা ছিল। কিন্তু এখন বাবুই পাখির বাসা আর দেখা যায় না। বাবুই পাখির বাসাটি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। বিভিন্ন এলাকাজুড়ে বাবুইপাখি তালগাছে বাসা বাঁধতো কিন্তু এখন আর কোথাও এই বাবুই পাখির বাসা দেখা যায় না বললেই চলে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর