চলনবিলাঞ্চলে ভোরের শিশিরবিন্দু জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে। ভৌগোলিক অবস্থান ও ঋতু বৈচিত্র্যের কারণে এখনই চলনবিলে ভোরে শীতের সঙ্গে দেখা মিলছে ঘন কুয়াশারও। দিনের বেলা আবহাওয়া গরম থাকলেও গত কয়েক দিন ধরে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে পরদিন ভোর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকে চারপাশ। ভোরে ও সন্ধ্যায় ধানের কচিপাতার ডগায় শিশির বিন্দু জমতে দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। রাত যত গভীর হয়, কুয়াশার ঘনত্ব এবং তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। টিনের ঘরের চালে যেভাবে কুয়াশা পড়ে, তাতে মনে হয় বৃষ্টি পড়ছে।
ভোরের সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে মিষ্টি রোদ আর সবুজ ঘাসের পাতার ওপর শিশির বিন্দু জানিয়ে দিচ্ছে দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। এখন প্রতিদিন ভোরে বিভিন্ন জায়গায় দেখা মিলছে কুয়াশার। ফসলের মাঠে উঁকি দিচ্ছে নতুন বীজের প্রস্ফুটিত চারা। তাতে শিশির বিন্দু ছড়িয়ে দিচ্ছে মৃদু শীতলতা।
রাতভর হালকা বৃষ্টির মত টিপটিপ করে কুয়াশা ঝরতে থাকে। বিশেষ করে মাঠে ঘাসের ডগায় ও ধানের শীষে জমতে দেখা গেছে বিন্দু বিন্দু কুয়াশা। এদিকে এ অঞ্চলে খেৎুর গাছের রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি শুরু করেছে গাছিরা। এছাড়াও ভোর ও সন্ধ্যায় ভাপা, চিতাই পিঠাসহ শীতের নানান পিঠা বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
স্থানীয়রা বলছেন, এ বছর আগাম শীত অনুভব হচ্ছে। দিনের বেলা কিছুটা গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে।
সিংড়া পৌর শহরের চকসিংড়া মহল্লার যুবক আশরাফুল ইসলাম নাইচ বলেন, এবার এলাকায় কুয়াশা বোধ হয় একটু আগেই চলে এসেছে। ভোরে শিশির জমছে ঘাসে। ভোরে ও সন্ধ্যায় হালকা শীত শীত লাগে।
নাসিম মাহমুদ নামে আরেকজন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে ঠান্ডা নামছে। আর এই সময়ে গরম কাপড় পড়তে হচ্ছে। তবে রাত ও সকালে ঠান্ডা করলেও দিনের বেলা গরম পড়ছে।
পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, শীতের আগমনী বার্তা প্রকৃতিতে এনে দেয় এক অন্যরকম অনুভূতি। ঘাসের ডগায় শিশির আর ফোঁটা ফোঁটা কুয়াশা পূর্ণতা দেয় শীতের সৌন্দর্যের।
এদিকে শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, টমেটো, লাল শাকসহ বিভিন্ন ধরনের আগাম শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ বলেন, প্রকৃতি শীতের আগমন জানান দিচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই তাপমাত্রা কমেছে। মূলত পৌষ-মাঘ এই দুই মাস শীতকাল ধরা হলেও আশ্বিন-কার্তিকের দিকেই শীত আসতে শুরু করে।