চাটমোহরে সোনালী আঁশ পাট চাষে কৃষকের সুদিন ফিরেছে। শষ্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলে চলতি পাট মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের ভালো ফলন ও দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাঁসির ঝিলিক।
চলনবিলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সময় মত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে ঢলের পানি না আসলেও কিছুদিন আগে ভারি বৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন জলাশয়ে পানি জমে। সেই পানিতেই এখন চাষিরা পাট কেটে নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং হাটে বাজারে তা বিক্রিসহ এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে নারী-পুরুষের অংশ গ্রহনে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করতে।
চলনবিলের চাটমোহর উপজেলায় গত বছরের চেয়ে এবার ১২০ হেক্টর জমিতে বেশী আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে লক্ষমাত্র ছিল ৮ হাজার ৮২০ হেক্টর। উপজেলায় ৮ হাজার ৯৪০হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
পাটের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার পাট চাষে ঝুঁকেছে কৃষক। গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষক পাট চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। অনেক কৃষকই বলছেন পাট চাষীদের সুদিন ফিরেছে।
চাটমোহর কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় দেশী ১৮০ হেক্টর, তোষা ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর এবং মেস্তা জাতীয় পাট আবাদ হয়েছে ১৬০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার বাঘলবাড়ি গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলী বলেন, সে এবছর চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এক বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়। পাট উৎপাদন হয় প্রায় ৮-১০ মন। যার বাজারদর প্রায় ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া বিঘা প্রতি প্রায় ২ হাজার টাকার পাটকাঠি পাওয়া যায়। গত বছর ভরা মৌসুমে প্রতিমণ পাট ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হলেও এবছর বিক্রি হচ্ছে ২৭০০-২৯০০ টাকা। ক্রমশই পাটের দাম বাড়ছেই।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুমবিল্লাহ জানান, পাট চাষীদের সুদিন ফিরেছে। পাট চাষ করে কৃষক এখন অনেক লাভবান হচ্ছেন। এ বছর উপজেলায় ২ হাজার ২০০ জন কৃষকদের মাঝে বীজ বিতরণ করা হয়েছে।