সাতই মার্চ; খোলা রেসকোর্স ময়দান
জনসমুদ্রের তুফানে দুলছে তো দুলছে
দীর্ঘ প্রতীক্ষায় লক্ষ লক্ষ বিদ্রোহী জনতা
কখন আসবে জনতার মহানায়ক?
তার ভাষণে কি নির্দেশনা আসবে?
কোন দিক যাবে পূর্ববঙ্গের ভবিষ্যৎ?
নিস্তেজ ছিলনা কোটি কোটি বাঙালি
অস্থির মস্তিষ্ক দীর্ঘ অপেক্ষার পথে
দাঁড়িয়ে ভাবনার দিকে মস্ত ব্যস্ত।
হঠাৎ ধূমকেতুর মত রেসর্কোস ময়দানে,
জনতার রুগ্ন ঠোঁটে ভাটি ধরা মনে
ফিরে পেল তৈল শ্যামলতা।
মহান নেতার ঠোঁট থেকে ঝরে পড়ে
অগ্নি ঝরা ভাষণ
হৃদয় দুর্গ উত্তাপে ফেটে চৌচির
বজ্রধ্বনির কণ্ঠনালী স্তব্ধ করতে;
নিল নকশায় তুলে নিলো পাকবাহিনী দল।
গিলে নিবো বাংলা ঠেলা এবার সামলা
দিল শত মামলা,
নিল জ্ঞানী গুণী নেতা ও আমলা।
বাঙালির,
এক দফা এক দাবি বন্দীদের মুক্তি দিবি
স্রোগানে স্রোগানে,
বাংলার আকাশ বাতাস কম্পিত!
হৃদয় উত্তপ্ত অগ্নি দাও দাও করে জ্বলছে
বাঙালি জাতির উদ্দীপনা স্তব্ধ করতে উন্মদ
মেতে ওঠে ধ্বংসের হোলি খেলায়
ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত বাঙালির উপর
শত শত লাশের স্তূপ,
রক্তের বন্যায় ভেসে যায় বক্ষ!
ডানা ভাঙা পাখির মত
ক্ষত-বিক্ষত বাঙালি জাতি;
পিতা হারা সন্তান কে
কে ঠেকাবে ভয়ংকর হায়েনার ছোবল থেকে ?
চিন্তিত গোটা বাঙালি জাতি!
জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ডের হঠাৎ আগমন
সুখ পদাঘাতে রিক্ত বাজায় মরণ বীণ
মাঝি হারা নৌকার হাল ধরে সে
ডেকে তোলে ঘুম থেকে,
জেগে উঠে ছাত্র, আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা
হাতে তুলে নেয়,অস্ত্র,লাঠি,
যুদ্ধের বিস্তীর্ণ মাঠে করে ঘাঁটি
শির করে নত অরি সেনার দল
হয়েছে স্বাধীন সবুজ বাংলা বিশ্ব বাজারে।