পাবনার ভাঙ্গুড়ায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় একই পরিবারের আটজনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন পলাতক রয়েছে, দুজন জেলহাজতে এবং দুজন জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। পুলিশের দাবি ওই পরিবারের জুয়েল (১৯) নামে একজন ওয়ারেন্ট মুক্ত আসামিকে ধরার সময় দুই পুলিশ সদস্যের উপর অন্যরা হামলা চালিয়ে আহত করায় এই মামলা দায়ের করা হয়। তবে মামলায় জামিন পাওয়া বৃদ্ধা জায়েদা খাতুন (৬৫) উল্টো পুলিশের বিরুদ্ধেই তার পরিবারের সদস্যদের মারধরের অভিযোগ করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাঙ্গুড়ায় পৌর শহরের উত্তর সারুটিয়া রেল লাইনের ধারে বসবাস করে জুয়েল। সে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিবে। তবে জুয়েল দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন সহ বিভিন্ন ধরনের জুয়া খেলার সাথে জড়িত। গত তিন মাস আগে জুয়া খেলা নিয়ে জুয়েল এক যুবককে মাথায় আঘাত করে মারাত্মকভাবে আহত করে। এতে ওই যুবকের মাথায় অন্তত দশটি সেলাই দিতে হয়। ওই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি জুয়েলকে ধরতে গত ১৭ তারিখ রাতে থানা পুলিশের এএসআই ইউসুফ ও এক কনস্টেবল জুয়েলের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় জুয়েলের বাড়িতে থাকা অন্যান্য সদস্যরা ওই পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করলে জুয়েল এএসআই ইউসুফের হাতে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে থানা পুলিশের একটি টিম গিয়ে ওই দুই পুলিশকে উদ্ধার করে এবং জুয়েলের স্ত্রী মরিয়ম (১৮), ভাগ্নি স্মৃতি (১৭), দুলাভাই সাইফুল (৪৫) ও মা জায়েদা খাতুন (৬৫) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় জুয়েলের বোন জিয়াসমিন (৩৫), ভাই ইজ্জাতুল (২৮) ও ভাবি মাঞ্জুয়ারা (২৩) পালিয়ে যান। ঐদিন রাতেই এএসআই ইউসুফ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে পুলিশের এই অভিযানে জুয়েলের আরেক ভাবি জরিনাকে আটক করে মারধর করা হয় বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিবারের। পরে অবশ্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে জুয়েলের মা জায়েদা ও দুলাভাই সাইফুল জামিনে মুক্ত হয়েছেন। তবে জুয়েল পলাতক থাকায় আগামী ৩০ এপ্রিল এসএসসি পরী¶ায় তার অংশগ্রহণ করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
বৃদ্ধা জায়েদা খাতুন বলেন, আমরা গরিব মানুষ। পুলিশ দেখলেই ভয় লাগে। মারব কেমনে। জুয়েল পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে পালাইয়া যাওয়ায় আমাদেরকেই পুলিশ মারধর করে ধরে নিয়ে গেছে থানায়। বাড়িতে কেউ না থাকায় না খেয়ে দিন যাচ্ছে এখন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মুরাদ হোসেন বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি তদন্ত শেষ হওয়ার পরে বিস্তারিত বলা যাবে।
এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, ওয়ারেনভুক্ত আসামি জুয়েল বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তার পরিবারের সদস্যরা তাকে রক্ষা করতে পুলিশের উপর হামলা চালায়। তাই মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে শুধুমাত্র দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।