মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :
চাটমোহরে মানব সেবা অভিযানে গাছ বিতরণ ও অনুদান প্রদান রাণীনগরে সালিশে হাজির না হওয়ায় বাড়িতে হামলা: ভাঙচুর তালাবদ্ধ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও রিজু তামান্না ভূমিসেবা পেতে সরকারি খরচ ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নিলে কঠোর ব্যবস্হা, হুশিয়ারি জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সাতক্ষীরা টিটিসিতে মানবপাচারের বিরুদ্ধে সচেতনতা সেশন অনুষ্ঠিত রাণীনগরে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারীকে ধ*র্ষ*ণ*চেষ্টা: অভিযুক্ত অধরা পাকুন্দিয়ায় আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত অভয়নগরে ভয়াবহ মাদকের ছড়াছড়ি, বাড়ছে চুরি ছিনতাইসহ নানামুখী অপরাধ

চাটমোহরে ৪ হাজার বিঘা বোরো আবাদে অনিশ্চিয়তা

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: বুধবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ৫:৫০ অপরাহ্ণ

পাবনার চাটমোহরের নি¤œাঞ্চলগুলোতে বোরো চাষ শুরু হয়ে গেছে। কিছু কৃষক ইতিমধ্যে বোরো চারা রোপণ করেছেন। তবে সেঁচ যন্ত্রের মালিক কর্তৃক সেঁচ চার্জ বাবদ চার ভাগের এক ভাগ ধান আদায়কে কেন্দ্র করে কিছু মাঠের কৃষক ও সেঁচযন্ত্রের মালিকদের মধ্যে দ্ব›দ্ব থাকায় এবং এখনও তা নিরসন না হওয়ায় সেঁচযন্ত্র মালিকরা কৃষকের জমিতে পানি দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি গভীর নলকূপ মালিক এখনও পানি দেননি কৃষকের জমিতে। এ ব্যাপারে উপজেলার বোয়াইলমারী এলাকার কৃষকেরা গত ১৯ ডিসেম্বর চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিএডিসি কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় প্রায় ৪ হাজার বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগাতে পারছেন না কৃষক। বিলের নিম্নঞ্চলে ধান লাগানো ইতিমধ্যেই প্রায় এক মাস বিলম্বিত হয়ে গেছে। এর ফলে ধান কাটতেও দেরী হবে এবং আগাম বন্যা হলে ধান ডুবে যাওয়ারও আশংকা করছেন কৃষক। সমস্যাটির সমাধানে ভূক্তভোগি শতাধিক কৃষক বুধবার (৪ জানুয়ারী) দুপুর ১২টার সময় ফের চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহলে’র সাথে দেখা করেন।
জানা গেছে, এ এলাকার প্রথা অনুযায়ী ইতোপূর্বে সেঁচযন্ত্রের মালিকরা চারভাগের এক ভাগ ধান নিয়ে আসছিলেন। কৃষককে সেঁচযন্ত্রের মালিকের অংশের ধানও কেটে দিতে হতো। এতে বছরের পর বছর কৃষকের লোকসান হচ্ছিল। কৃষককে লোকসানের কবল থেকে বাঁচাতে ২০২১ সালের উপজেলা সেচ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয় সেচ চার্জ বাবদ কৃষককে সেঁচযন্ত্রের মালিকদের বিঘা প্রতি গভীর নলকূপের ক্ষেত্রে ১ হাজার ৯০০ ও অগভীর নলকূপের ক্ষেত্রে ১ হাজার ৯৫০ টাকা করে দিতে হবে। কৃষকদের মাঝে সেসময় এ সংক্রান্ত লিফলেটও বিতরণ করা হয়। তবে মৌসুমের শুরুতে কৃষকরা নগদ টাকা না দিয়ে আবাদের শেষ দিকে এসে পাঁচ ভাগের এক ভাগ ধান দিতে চান সেঁচযন্ত্রের মালিকদের। ধান পাকার ঠিক আগ মুহুর্তে বিভন্ন গ্রামে মাইকিং করে কৃষককে পাঁচ ভাগের এক ভাগ ধান সেচ যন্ত্র মালিকদের দিতে বলায় কৃষক খুশী হলেও ক্ষুব্ধ হন সেচ যন্ত্রের মালিকরা। কিছু সেঁচ যন্ত্রের মালিক ২০২২ সালের ৪ মে উপজেলার ধুলাউড়ি গ্রামের পাশর্^বর্তী জোড়দহ (ডাকাতের ভিটায়) সাবেক এমপি শামসুদ্দিন খবিরের উপস্থিতিতে সভা করেন। তখন তারা দাবী করেন উপজেলা সেচ কমিটি ইরি বোরো মৌসুমে কৃষকের জমিতে সেচ বাবদ গভীর নলকূপ (সকল ক্ষেত্রে) ১ হাজার ৯০০ টাকা প্রতি বিঘা ও অগভীর নলকূপ (সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) ১ হাজার ৯৫০ টাকা নির্ধারণ করলেও সেচ যন্ত্র মালিকদের এ সংক্রান্ত কোন নোটিশ প্রদান করেন নি। এমনকি মৌসুমের শুরুতেও উপজেলা সেচ কমিটি সেঁচযন্ত্রের মালিকদের এ সংক্রান্ত কোন নোটিশ করেননি। কোন কৃষকও জমিতে সেচ নেওয়ার জন্য টাকা পরিশোধ করেন নি সেসময়। ধান কাটার ঠিক আগ মুহুর্তে মাইকিং করে কৃষকদের পাঁচ ভাগের এক ভাগ ধান দিতে বলায় তারা প্রশ্ন তোলেন এটা কেমন নিয়ম। নিয়ম-অনিয়মের মধ্য দিয়ে গত মৌসুমে কোথাও চার ভাগের একভাগ আবার কোথাও পাঁচ ভাগের একভাগ ধান নেন সেঁচযন্ত্রের মালিকরা। চলতি মৌসুমে এসে সমস্যাটি প্রকট হয়।
এ ব্যাপারে গভীর নলকুপ মালিক শামসুদ্দিন খবির জানান, কৃষকের জমিতে পানি দিচ্ছিনা একথা ঠিক নয়। নলকূপের বৈদ্যুতিক সংযোগ নিয়েছি। পানিও দিচ্ছি। কিন্তু কোন কৃষক টাকা দিচ্ছে না। শতকরা ৯০ ভাগ কৃষক নির্ধারিত হারে টাকা দিয়ে বোরো চাষে অনিহা প্রকাশ করছেন। কিছু কৃষক পাঁচ ভাগের এক ভাগ ধান দিয়ে আবাদ করতে চান। আমি আইনের উর্ধে নই। আইনানুযায়ী টাকা দিয়ে কৃষক বোরো চাষ করুক। প্রয়োজনে দুই দফায় টাকা পরিশোধ করুক। দুই চারজন কৃষক অন্যদের বিভ্রান্ত করছে। প্রয়োজনে কৃষক কমিটি করে গভীর নলকূপ চালাক তাতেও আমার আপত্তি নেই। আশা করি খুব শীঘ্রই এর সমাধান হবে।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, সেঁচ চার্জ অল্প কিছু বাড়ানো হয়েছে। আসলে টাকার বিনিময়ে সেঁচের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ ব্যাপাারে সমন্বয়ের জন্য বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারী) কৃষক এবং গভীর-অগভীর নলকূপ মালিকদের সাথে কথা বলবো আমরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহল জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই সমাধান করতে পারবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর