রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

তিস্তার বালু চরে ফলছে চৈতালি ফসল

এম এ মাসুদ, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:৩১ অপরাহ্ণ

আমনের পর অধিক ফসল ফলাতে চলতি রবি মৌসুমেও প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের চাষিরা। বাদ যায়নি তিস্তার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের তপ্ত বালু চরও। সেখানেও তপ্ত বালুতে চৈতালি ফসল ফলাচ্ছেন চাষি, আর চাষ করছেন- আলু, গম, সরিষা, মসুর ডাল, কাউন, তিশি, কালোজিরে, চীনা ও চীনাবাদামসহ নানান রবি শস্য।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, চলতি রবি মৌসুমে প্রায় লক্ষাধিক চাষী তাদের কৃষি জমিতে চাষ করেছেন রবি শস্য। এরমধ্যে আলু ১ হাজার ২০ হেক্টর, সরিষা ২ হাজার ৪২০ হেক্টর, গম ১ হাজার ৫০ হেক্টর, মসুর ডাল ৬৫ হেক্টর, কাউন ৩ হেক্টর, চীনা ২ হেক্টর, পেঁয়াজ ৪৫৫ হেক্টর, রসুন ৭০ হেক্টর, চীনাবাদাম ১০০ হেক্টর, কলা ১২০ হেক্টর, ভুট্টা ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর। এছাড়া আরো বেশ কিছু হেক্টর জমিতে লাগানো হয়েছে মুগ ডাল, সূর্যমূখী, সয়াবিন, তিল, তিসি, কালোজিরা।  টমেটো, বেগুন, লেডিফিঙ্গার, লাউ, করলা, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, গাজর, লালশাক, পুঁইশাক, পালং শাকসহ নানান শাকসবজি চাষ করা হয়েছে ৬৫০ হেক্টর।
আর রবিশস্য চাষে উৎসাহিত করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক ৭ হাজার ৪৭৫ জন চাষির প্রত্যেককে ১ বিঘা জমিতে চাষের জন্য প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে সার ও বীজ। যারমধ্যে শাকসবজি দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৫০০ জন, গম ১ হাজার ৪৫০, ভূট্টা ৮৩০ জন, সরিষা ৩ হাজার ৩০০ জন, বাদাম ৭৫ জন, সূর্যমূখী ১৬০ জন, পেঁয়াজ ৪০ জন, মসুর ডাল ৫০ জন, মুগ ডাল ৫০ জন এবং সয়াবিন দেওয়া হয়েছে ২০ জনকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার তারাপুর, বেলকাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চরাঞ্চলের চাষিরা আলু, সরিষা, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ক্ষেতের পরিচর্যার জন্য সকাল থেকেই ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। ফুটন্ত বালু রয়েছে এমন জমিতে আলু চাষ করেছেন অনেকেই। বালু জমিতে আলুর অঙ্কুরোদ্গম করতে সেচ দিচ্ছেন কৃষক সুধীর চন্দ্র। যিনি এক বিঘা জমিতে লাগিয়েছেন আলু। কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এই এক বিঘা বালু জমি তিনি কন্ট্রাক্ট নিয়েছেন ২ হাজার টাকায়। উৎপাদনে ব্যয় হবে প্রায় ২২-২৩ হাজার টাকা। আর ফলন হতে পারে ৪০-৪৫ বস্তা (৮০ কেজির)।’
কৃষক আজিজুল  হক ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে রফিককে সাথে নিয়ে কাজ করছিলেন আলু ক্ষেতে। তিনিও লাগিয়েছেন দেশি পাকরি আলু। তিনি আশা করছেন, বিঘায় ফলন হবে, ৪০-৫০ মন। নিজে কাজ করছেন। তাই খরচ হতে পারে ১৪-১৫ হাজার টাকা।
আরবি রবী শব্দের অর্থ বসন্ত। সম্ভবত একারণেই এর নাম রবিশস্য বলে জানালেন ৭৪ বছর বয়সী কৃষক মজিবুর রহমান। ফালগুন-চৈত্র মাসে তোলা হয় এ ফসল তাও বললেন তিনি।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে এক ইঞ্চি মাটিও যেন ফাঁকা না থাকে সেজন্য নিরলসভাবে কাজ করছে কৃষি বিভাগ জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাশেদুল কবির বলেন, ‘ আমরা তেলের চাহিদা মেটাতে তেল এবং ডাল জাতীয় ফসলের ্ওপর জোর দিয়েছি। পাশাপাশি বীজের ওপর পরনির্ভশীলতা কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন ফসলের বীজ সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com